এসজেডিএ দুর্নীতি |
হোর্ডিং ভাঙায় আলোড়ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এসজেডিএ দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসের তরফে হোর্ডিং টাঙানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার হাসমি চকে জেলা কংগ্রেস অফিসের নীচে হোর্ডিং লাগানো হয়। রাতেই সেই হোর্ডিং ভেঙে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা কংগ্রেস কমিটি সাধারণ সম্পাদক সুজয় ঘটক।
কংগ্রেস নেতা সুজয়বাবু বলেন, “যাঁরা এই ঘটনায় জড়িত, তাঁদের মদেত এ কাজ হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি পুলিশকে জানান হয়েছে। কারা এ কাজ করেছেন তা সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশকে জানাতে বলেছি। তবেই দোষীদের চিহ্নিত করা যাবে।” তিনি আরও বলেন, “একটি হোর্ডিং খুলে দিয়ে দোষীরা কি নিজেদের আড়াল করতে পারবেন? দু’দিনের মধ্যে শহর জুড়ে এই হোর্ডিং লাগানো হবে।” এসজেডিএ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যে একাধিক ইঞ্জিনিয়র, ঠিকাদার সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলায় জেরা করা হয়েছে তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মালদহের ডিএম গোদালা কিরণ কুমারকে। শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকারকে পুলিশ জেরা করে। |
|
|
বৃহস্পতিবার হাসমি চকে জেলা কংগ্রেস অফিসের নীচে হোর্ডিং
লাগানো হয়। রাতেই সেই হোর্ডিং ভেঙে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। |
|
তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক ও শিলিগুড়ির প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মাকেও পুলিশে ডেকে নানা তথ্য যাচাই করেছে। এ দিন ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোয় দুর্নীতির মামলায় আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)-র দুই ঠিকাদারকে নতুন করে পুলিশি হাজতে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার ও সপ্তর্ষি পালকে শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে পেশ করা হলে পুলিশ ৬ দিনের হেফাজতের আর্জি জানায়। ৫ দিনের হেফাজত মঞ্জুর হয়েছে বলে সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া জানিয়েছেন। এদিকে এসজেডিএর বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকারের আরও তিন কোটি টাকার হিসাববহির্ভূত সম্পত্তির হদিস পেয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় দু’জায়গায় জমি ও হাকিমপাড়ার ফ্ল্যাট সহ আরও একটি বাড়ির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মৃগাঙ্কবাবু দু’জায়গায় জমির জন্য অগ্রিম টাকা দেন বলে পুলিশের হাতে প্রমাণ এসেছে। সেই জমির খোঁজ করছে পুলিশ। তাঁর আয় ও ব্যায়ের বৈষম্য পুলিশকে অবাক করেছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন এ দিন বলেন, “অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে নেওয়া হবে।” অন্য দিকে মৃগাঙ্কবাবুকে ফের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ায় ফের শঙ্কর পালকে জেরা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ মৃগাঙ্কবাবুর জমি কেনার টাকার লেনদেন শঙ্করবাবুর বাড়িতে বসে হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। ফের জেরার মুখে পড়তে পারেন অপর ঠিকাদার সুব্রত দত্তও। তাঁর বিরুদ্ধে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মান ও বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিতে জড়িয়ে গিয়ে মামলা করা হয়েছে। মৃগাঙ্কবাবুর আইনজীবী পার্থ চৌধুরী বলেন, “মৃগাঙ্কবাবুকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলেও নতুন তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা কম।” তবে তাঁর মক্কেলের প্রভূত সম্পত্তির বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মামলায় এই দু’জন ছাড়াও প্রবীণ কুমার নামে এক বাস্তুকারও গ্রেফতার হন। তিনিও জেল হাজতে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত এসজেডিএর বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় ৬০ কোটি টাকার নয়ছয়ের হিসেব মিলেছে।
|
পুরনো খবর: এসজেডিএ প্রকল্পের বরাত নিয়ে জালিয়াতি ই-টেন্ডারে, অভিযোগ |
|