|
|
|
|
একশো দিনের কাজ |
ভাবনাই সার, ফেসবুকে তথ্য বিনিময় অন্ধকারেই
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
একশো দিনের কাজে কোন এলাকায় কেমন হারে যোগ দিচ্ছেন মহিলারা? এমন কোনও প্রকল্প কোথাও চলেছে কি, যেখান সব শ্রমিকই মহিলা? কোথায় কেমন ভাবে হচ্ছে কাজের প্রশিক্ষণ? তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষেরা কতটা যোগ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে?
নিজেদের মধ্যে এমন নানা তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ফেসবুককে হাতিয়ার করার পরামর্শ দিয়েছেন একশো দিন প্রকল্পের এ রাজ্যের কর্তারা। গত ৩ জুলাই রাজ্যের তরফে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের এ রাজ্যের কমিশনার তথা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব দিব্যেন্দু সরকার তার দু’দিন আগে একটি ব্লগ-পোস্টে রাজ্যের সব জেলা ও ব্লককে তাদের নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার অনুরোধ করেছেন। ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠিয়ে সেই সব অ্যাকাউন্ট রাজ্যের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করতেও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু সাড়া যে বিশেষ মেলেনি, অগস্টে নিজের ব্লগে সে কথা জানিয়েছেন দিব্যেন্দুবাবু নিজেই।
দিব্যেন্দুবাবু জানান, একশো দিনের প্রকল্পের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলার পিছনে বেশ কিছু যুক্তি রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে ফেসবুক এখন বেশ শক্তিশালী ও তার পরিধিও রীতিমতো বড়। নানা অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার বড় মাধ্যম এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। তাঁর মতে, জেলা ও ব্লক স্তরে একশো দিনের কাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলে তার মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজকর্মের খতিয়ান প্রকাশ করা যাবে। কাজ করতে ইচ্ছুক কত জনকে কাজ দেওয়া গিয়েছে, কতগুলি প্রকল্পের কাজ হাতে-কলমে শুরু করা গিয়েছে, কোন প্রকল্প শেষ করা গিয়েছেএই সমস্তই ফেসবুকের মাধ্যমে জানা যাবে। নানা ব্লকের তরফে দিনের শেষে তথ্য জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হলে জেলা স্তরের মোট তথ্যও প্রকাশ করা যাবে।
একশো দিনের প্রকল্পে নানা জায়গায় বিশেষ উদ্যোগে নানা কাজ হয়ে থাকে। ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অন্য এলাকাগুলিও তা জানতে পারলে তাদের সুবিধা হতে পারে। এ ছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে একশো দিনই কাজ পাওয়া বা পেতে চলা শ্রমিকদের ছবি-সহ কাহিনী প্রকাশ, সাফল্যের গল্প আদান-প্রদান হতে পারে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কতটা যুক্ত করা গিয়েছে, প্রকল্পে ই-মাস্টার এবং অন্য সফ্টওয়্যার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কেমন, তা নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলতে পারে ফেসবুকে। ছবি দিয়ে আকর্ষণীয় করা যেতে পারে এই পেজ। এমন নানা উদ্দেশ্যেই এই ভাবনা নিয়েছিলেন প্রকল্পের কর্তারা।
দিব্যেন্দুবাবুর অভিজ্ঞতা, ব্লগে অনুরোধের মাসখানেক পরেও চারটি জেলায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলাই হয়নি। তাদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। ব্লক স্তরে পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। রাজ্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠিয়েছে মাত্র ১৪টি ব্লক। তার মধ্যে নদিয়ার ছ’টি, উত্তর দিনাজপুর ও জিটিএ-র দু’টি করে এবং মুর্শিদাবাদ, হুগলি, বীরভূম ও পুরুলিয়ার একটি করে ব্লক রয়েছে।
যারা অ্যাকাউন্ট খুলেছে, তাদের অধিকাংশের ফেসবুক পেজেও অবশ্য কাজের কাজ বিশেষ কিছু হয়নি। কোচবিহার, মালদহ, হাওড়া বা পুরুলিয়ার ফেসবুক পেজে কাজকর্মের তেমন কোনও নমুনা নেই। দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়ার মতো জেলার পেজে কয়েকটি ছবি ছাড়া তেমন কিছু মেলে না।
অন্য নানা জেলা দু’টি-একটি পোস্ট করেই দায় সেরেছে। তুলনায় জলপাইগুড়ি এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে খানিকটা সক্রিয়তা দেখিয়েছে বলে জানান দিব্যেন্দুবাবু।
স্বচ্ছতা ও জনসংযোগ বজায় রাখতে ই-প্রশাসনের ভাবনা যে এখনও তিমিরে, জেলা ও ব্লকের একশো দিনের কাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যেন তারই আর একটি উদাহরণ। |
|
|
|
|
|