জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু
লকাতা থেকে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি পর্যন্ত ৬ নম্বর জাতীয় সড়কটি চার লেন করা হয়েছিল অনেক আগেই। এখন রাস্তাটি ছয় লেন করার জন্য সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু চৌরঙ্গি থেকে চিচিড়া পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণ এখনও বাকি। এই অংশে রাস্তাটি বেহালও। ভাঙাচোরা পথে ঝুঁকি নিয়েই যান চলাচল করে। চলতি বছরেই যাতে এই অংশের রাস্তা সারিয়ে সম্প্রসারণ শুরু করা যায়, সেই তোড়জোড় শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (প্রোজেক্ট ডিরেক্টর) তপনকুমার বৈদ্য বলেন, “সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে শুধু জমি অধিগ্রহণ। অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলেই সম্প্রসারণ শুরু হয়ে যাবে। আমরা আশাবাদী, চলতি বছরের শেষ দিকে সম্প্রসারণের কাজ শুরু করতে পারব।” জমি অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত বলেন, “এ ব্যাপারে সব দিক দিয়েই দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
প্রথম ধাপে কলকাতা থেকে চৌরঙ্গি পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারিত হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপে চৌরঙ্গি থেকে চিচিড়ি হয়ে বিহারের মহুলিয়া পর্যন্ত ১২৫.৯০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে বলে জাতীয় সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাস্তার দু’দিকে প্রায় ৩০টি গ্রামের কিছু অংশ বা কিছু বাড়ি সরাতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে রাস্তাটির প্রায় ৫৫ কিলোমিটার অংশ রয়েছে। এর জন্য ৩০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটতে হবে ২১ হাজার। পরিবর্তে ৬১ হাজারেরও বেশি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সড়ক বিভাগ। খাসজঙ্গলে একটি টোলপ্লাজা হবে। উড়ালপুল হবে ৫টি, আন্ডারপাস হবে ১৭টি। ২৪টি কালভার্ট সংস্কার করতে হবে, ১৮টি নতুন কালভার্ট তৈরি করতে হবে। ডুলুং নদীর উপর একটি বড় সেতু হবে, বিভিন্ন জায়গায় আরও ৭টি ছোট সেতু তৈরি করা হবে। বাস বে হবে ৮টি, ট্রাক বে ৩টি, ৯টি সার্ভিস রোড। যে সব গ্রামের জমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন, সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠক করেছে জাতীয় সড়ক বিভাগ ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তপনবাবু বলেন, “সকলকেই জাতীয় সড়ক বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গ্রামের মানুষ তাতে রাজি হয়েছেন। সমস্যা হবে না বলেই আমাদের আশা।”
গুপ্তমণি মন্দির নিয়ে অবশ্য জটিলতা রয়েছে। রাস্তার ধারেই রয়েছে এই মন্দির। এখন প্রশ্ন রাস্তা সম্প্রসারণ হলে মন্দির কোথায় যাবে? জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রথমে চেষ্টা করা হবে যাতে মন্দিরটি মাঝে রেখেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করা যায়। প্রযুক্তিগত সমস্যা না হলে তাই করা হবে। সে রকমই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে যদি দেখা যায়, মন্দির রাখলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে তখন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে তা অন্যত্র সরানোর জন্য পদক্ষেপ করা হবে। তবে সবই হবে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই।
৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা দিয়ে ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাস ও লরি পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। দিনে কয়েক হাজার গাড়ি যাতায়াত করে ওই রাস্তা দিয়ে। চৌরঙ্গির পর থেকে রাস্তাটির এখন জীর্ণ দশা। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে অত্যন্ত ধীরে যান চলাচল করে। এতে সময়ও নষ্ট হয়। যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পারায় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। কেন রাস্তা সংস্কার হয়নি? তপনবাবুর কথায়, “রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু বর্ষা এসে যাওয়ায় কাজ করা যায়নি। বর্ষার পরেই সংস্কার শুরু হবে।” কত দ্রুত কাজ হয়, তারই অপেক্ষায় এলাকাবাসী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.