তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। এ বার প্রকাশিত হল রঘুনাথপুর উন্নয়ন পর্ষদের (রঘুনাথপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা আরডিএ) ‘ল্যান্ড ইউজ’ মানচিত্র। শুক্রবার রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে ওই মানচিত্রের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার আগে উন্নয়ন পর্ষদ গঠন ও রূপায়ণ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করেন মন্ত্রী। বৈঠকে ছিলেন রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব দেবাশিস সেন, পুরুলিয়ার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি।
পরে মন্ত্রী বলেন, “প্রশাসনিক কাজকর্মের সুবিধার জন্য রঘুনাথপুরের উন্নয়ন পর্ষদকে আপাতত আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে কাজ করা হবে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে আরডিএ-র নতুন অফিস তৈরি করা এবং কর্মী নিয়োগ করতে গেলে অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে। কিন্তু, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) তৈরি পরিকাঠামো রয়েছে। কর্মীও রয়েছেন। তা ছাড়া, রঘুনাথপুর শহর থেকে আসানসোলের দূরত্বও বেশি নয়। ফলে, এডিডিএ-র সঙ্গে আরডিএ-কে জুড়ে দিয়ে কাজ চালাতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। বস্তুত, আরডিএ পুরোদস্তুর কাজ শুরু করলে তা রঘুনাথপুরের উন্নয়ন ও শিল্পায়নের পক্ষে ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে বলেই মনে করছেন এখানকার বাসিন্দারা।
শিল্পায়নের লক্ষ্যেই রঘুনাথপুর মহকুমার তিনটি ব্লককে নিয়ে উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার কাজ শুরু করেছিল তৃণমূলের সরকার। বিজ্ঞপ্তি জারি-সহ অন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে এলাকার ‘ল্যান্ড ইউজ’ মানচিত্র তৈরির সমীক্ষা চলছিল। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে সেই মানচিত্রের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করা হল। রঘুনাথপুর উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় থাকছে গোটা রঘুনাথপুর ১ ব্লক (যার মধ্যে থাকছে রঘুনাথপুর পুরসভা এলাকাও) ও রঘুনাথপুর ২ ব্লক এবং নিতুড়িয়ার ব্লকের একাংশ। তিন ব্লক মিলিয়ে মোট ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৫৬টি মৌজা আরডিএ-র অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে, এ দিন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি মন্ত্রীর কাছে উন্নয়ন পর্ষদের মধ্যে নিতুড়িয়া ব্লকের পুরো এলাকা এবং সাঁতুড়ি ব্লককেও জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিধায়ক বলেন, “মন্ত্রীকে ওই প্রস্তাব দিয়েছি। উনি রাজি হয়েছেন।”
পুরমন্ত্রী জানান, এলাকার শিল্পায়নে ‘ল্যান্ড ইউজ’ মানচিত্রের প্রচুর গুরুত্ব রয়েছে। কোথায় কারখানা হবে, কোথায় আবাসন তৈরি হবে, কোথায় কোথায় পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে এই মানচিত্রে। বস্তুত, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো চাষযোগ্য জমি কম থাকা জেলায় শিল্পায়নেই জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই প্রক্ষিতেই রঘুনাথপুরে উন্নয়ন পর্ষদ হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “রঘুনাথপুরে বড় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। আরও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব এসেছে। এই অঞ্চল ‘বিশেষ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্র’ হিসাবে তৈরি হচ্ছে।” বস্তুত নতুন ‘ইকনমিক করিডর’ (রানিগঞ্জ থেকে রঘুনাথপুর হয়ে ধানবাদ পর্যন্ত ছ’লেনের রাস্তা) সেই লক্ষ্যেই তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
|