উদ্বোধনের আগেই পরপর চুরি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
উদ্বোধনের আগেই ঝাড়গ্রামের বাঁদরভুলায় সদ্য তৈরি হওয়া প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে পর পর চুরির ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে বন দফতর। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর শিলদায় প্রশাসনিক জনসভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন অথবা তার পরের দিন প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। কেন্দ্রটির নামকরণও করবেন তিনি। কিন্তু উদ্বোধনের আগেই ওই প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রের জলের পাইপ লাইন কেটে নিয়ে গিয়েছে চোরেরা। যার ফলে ফের নতুন করে তার কাজ করতে হয়েছে। কয়েক দিন আগে পর্যটন কেন্দ্রের জানালা ভেঙে চুরি গিয়েছে সাতটি সিলিং ফ্যান। এই পরিস্থিতিতে সেখানে রাত পাহারার ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। তা সত্ত্বেও সুযোগ পেলেই রাতের বেলা পর্যটন কেন্দ্রের জানালার কাঁচ ভেঙে চুরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এলাকাবাসীর বক্তব্য, জঙ্গলের মাঝে ওই নির্জন এলাকায় দুষ্কৃতীদের উপদ্রব ঠোকাতে গেলে উপযুক্ত সশস্ত্র রক্ষী মোতায়েন করাটা জরুরি। না হলে জঙ্গলের মধ্যে কী ভাবে পর্যটকেরা রাত্রিবাস করবেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিতে চাননি বন দফতরের কর্তারা। ঝাড়গ্রামের বিভাগীয় বন আধিকারিক আশিসকুমার সামন্ত বলেন, “ঠিকাদারের অভিযোগ পাওয়ার পরই ওখানে রাত পাহারার ব্যবস্থা হয়েছে। লোকজনের সমাগম হলে আর সমস্যা থাকবে না।” রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের ডিভিশনাল ম্যানেজার (দক্ষিণ বিভাগ) মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রটি পরিচালনা করবেন। ওই সদস্যরাই এখন পালা করে পাহারা দিচ্ছেন। এলাকাটি জনশূন্য থাকায় কিছু অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছিল। এখন কোনও সমস্যা নেই।” |
|
বাঁদরভুলায় জানলার ভাঙা কাচ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
জঙ্গলের মাঝে পর্যটকদের থাকার জন্য ঝাড়গ্রাম শহরের উপকন্ঠে বাঁদরভুলায় ও গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়িতে দু’টি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের বরাদ্দকৃত প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকায় ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে পর্যটন কেন্দ্রের কটেজগুলি তৈরি করা হয়েছে। বাঁদরভুলায় কটেজ সংলগ্ন এলাকায় থাকছে মুক্ত মঞ্চ এবং আদিবাসী লোকসংস্কৃতি ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনী-সংগ্রহশালা। পুজোর আগেই সেটি পর্যটকদের জন্য খোলা হচ্ছে।
ঝাড়গ্রামের বাঁদরভুলায় প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি তৈরি করতে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। শহরের উপকন্ঠে জঙ্গল এলাকায় সন্ধের পর চুরি ও সড়ক ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বাঁদরভুলার প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি সেজে ওঠার পরই সেটির উপর নজর পড়েছে দুষ্কৃতীদের। প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র তৈরির বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার শক্তিপদ ঘোষ বলেন, “সব ক’টি কটেজের পাইপ লাইন চোরেরা কেটে নিয়ে যাওয়ায় ফের কাজ করতে হয়েছে। সাতটি সিলিং ফ্যান চুরি গিয়েছে। দু’বার চুরি হয়েছে সাব-মার্সিবল পাম্প। বন দফতরকে তা জানানোর পর এখন রাত পাহারা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশেও অভিযোগ জানিয়েছি।”
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছানুসারেই পর্যটকদের জন্য ওই কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। ফলে, সেটির মর্যাদাহানি হতে দেওয়া যাবে না।”
|
পুরনো খবর: এ বার পুজোয় রাত কাটাতে পারেন জঙ্গলে |
|