|
|
|
|
৪ জেলায় ঢুকতে কোর্টের অনুমতি লাগবে লক্ষ্মণের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের জামিন খারিজের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার নাকচ করে দিয়েছে। তবে তাঁর জামিন মঞ্জুর করার সময় কলকাতা হাইকোর্ট যে-সব শর্ত আরোপ করেছিল, তা আরও কঠোর করেছে শীর্ষ আদালত। হাইকোর্টের শর্ত ছিল, লক্ষ্মণবাবু আদালতের নির্দেশ ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ঢুকতে পারবেন না। আর সর্বোচ্চ আদালত এ দিন জানায়, আদালতের অনুমতি ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর-সহ চারটি জেলায় যেতে পারবেন না তিনি। বাকি তিনটি জেলা হল পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া।
সুপ্রিম কোর্টের আরও নির্দেশ, লক্ষ্মণবাবু নির্বাচনে যোগ দিতে পারেন, হতে পারেন প্রার্থীও। কিন্তু তিনি কোনও মিটিং-মিছিল করতে পারবেন না। মনোনয়নপত্র পেশ করতে চাইলে নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে জানিয়ে তবেই তা করতে পারবেন। আগামী ছ’মাসের মধ্যে নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলার বিচার শেষ করতে হবে। প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ২টোর মধ্যে ভবানী ভবনে হাজিরা দিতে হবে প্রাক্তন সাংসদকে।
২০০৭-এ বাম জমানায় সিপিএমের ‘নন্দীগ্রাম পুনর্দখল’ পর্বে বহু মানুষ নিখোঁজ হন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে সিবিআই নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় যে-চার্জশিট দেয়, লক্ষ্মণবাবুর নাম আছে। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। গত বছর ১৩ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁকে শর্তাধীনে জামিন দেয়। রাজ্য জামিনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। শীর্ষ আদালতে প্রাক্তন সাংসদের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়েছিল নিখোঁজদের পরিবারও। এ দিন তার নিষ্পত্তি হয়।
সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশের প্রতিক্রিয়ায় লক্ষ্মণবাবু বলেন, “রাজ্য সরকার আমার জামিনের বিরোধিতা করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটা মানেনি। আদালতের রায় না-দেখে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে মন্তব্য করব না।” নিখোঁজদের পরিবারের হয়ে সর্বোচ্চ আদালতে লড়েছিলেন রাজদীপ মজুমদার। তিনি এ দিন বলেন, “নন্দীগ্রামের ওই ঘটনার সময় লক্ষ্মণবাবু সংশ্লিষ্ট এলাকার সাংসদ ছিলেন। তিনিই ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী। তাই তাঁর জামিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।”
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি দীপক বর্মা ও বিচাপতি দাভের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। লক্ষ্মণবাবুর আইনজীবী মুকুল রোহাতগি সওয়ালে বলেন, তাঁর মক্কেল লোকসভা ভোটে যোগ দেবেন। তাই তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হোক। আর রাজদীপবাবুরা লক্ষ্মণবাবুর জামিন বাতিলের আর্জি জানান। সুপ্রিম কোর্ট দু’টি আবেদনই খারিজ করে দেয়। তারা জানায়, লক্ষ্মণবাবু দেড় বছর ধরে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তাই এখনই তাঁর জামিন বাতিল করা হচ্ছে না। তবে তাঁর জামিনের শর্ত আরও কঠোর করা হচ্ছে। তার পরেই অনুমতি না-নিয়ে চার জেলায় তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শীর্ষ আদালত জানায়, লক্ষ্মণবাবুর ভোটে প্রার্থী হতে বাধা নেই। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের এসপিকে জানিয়ে তবেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। কিন্তু মিছিল বা সভা করতে পারবেন না। আর প্রতি সপ্তাহে কলকাতায় এক দিন ভবানী ভবনে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরে হাজিরা দিতে হবে। |
|
|
|
|
|