|
|
|
|
অচল পথবাতি, সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এমনিতেই নেই পর্যাপ্ত পথবাতি। তার উপর মেরামতির অভাবে অচল হয়ে পড়েছে বেশ কিছু পথবাতি। ফলে, সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে মেদিনীপুর শহরের ছোট রাস্তাগুলি। সমস্যায় পড়ছেন পথচলতি সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মহিলারা। অন্ধকার রাস্তায় নিরাপত্তার অভাব দেখা দিচ্ছে। সমস্যার কথা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। তবে তাঁদের দাবি, কোথাও পথবাতি অচল হলে দ্রুত মেরামতি করা হয়। প্রয়োজনে নতুন লাগানো হয়। পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক মৃগাঙ্ক বাগ বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে কখনও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে সমস্যা হয়। পথবাতি অচল হয়ে পড়ার খবর এলেই পুরকর্মীদের মেরামতির জন্য পাঠানো হচ্ছে। একই বক্তব্য মহকুমাশাসক (সদর) তথা পুরসভার প্রশাসক অমিতাভ দত্তর।
মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লি, রাঙামাটি, তাঁতিগেড়িয়া, অশোকনগর, বিশ্ববিদ্যালয় রোড, ধর্মা, নজরগঞ্জ প্রভৃতি এলাকার বেশ কিছু ছোট রাস্তা সন্ধ্যা হলে প্রায় অন্ধকার হয়ে যায়। ফলে, মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। শহরের আশপাশে নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। কিন্তু, নতুন এলাকার বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় পুর- পরিষেবা পাচ্ছেন না বলেই অভিযোগ। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। পাকা রাস্তা নেই। নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হয় না। সঙ্গে রয়েছে পথবাতির সমস্যাও। সদর শহরে এখন পথবাতির সংখ্যা ঠিক কত? পুরসভা সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৪৫৬টি পথবাতি রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ ওয়াটের ৫৯৪টি, ৬০ ওয়াটের ৪ হাজার ৪২টি। ২০০ ওয়াটের সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্প ৭৫৯টি। হাইমাস্ট ৪টি। এবং ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ৫৭টি। |
|
মেদিনীপুরের রাস্তায় চলছে পথবাতি মেরামতির কাজ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
পালাবদলের পরপরই শহরের সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ করেন। তারই অন্যতম ত্রিফলা বাতি লাগানো। এখন অবশ্য এই বাতির একাংশও অচল হয়ে পড়েছে। দেখভালের অভাবে এই পরিস্থিতি বলে শহরবাসীর অভিযোগ। ফলে, শহরের সৌন্দর্যায়নও উঠছে প্রশ্নের মুখে। ত্রিফলা বাতিগুলো লাগিয়ে ছিল মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেট (এমইডি)। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, “শহরকে সুন্দর রাখতে হলে সকলকেই সমান উদ্যোগী হতে হবে। বাসিন্দাদের আরও সচেতন হতে হবে। রাস্তার পাশে ত্রিফলা বাতিগুলোতে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ ইঁট ছুঁড়ে কিছু বাতি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের পক্ষে সব সময় তো আর নজর রাখা সম্ভব নয়।”
এ দিকে, রাতের মেদিনীপুরও খুব একটা নিরাপদ নয়। রাত হলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম শুরু হয়। শহরবাসী উদ্বেগে থাকেন। সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত পথবাতির অভাব। বিশেষ করে ছোট রাস্তাগুলোয়। মিরবাজার, বল্লভপুর, কোতবাজার, নতুনবাজার, ক্ষুদিরামনগর, পাটনাবাজার, মির্জাবাজার, বার্জটাউন প্রভৃতি এলাকার বেশ কিছু অলিগলিতে শহরে পথবাতির সংখ্যা কম রয়েছে বলে অবশ্য মানতে নারাজ পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক মৃগাঙ্কবাবুর বক্তব্য, “শহরের বড় রাস্তাগুলোয় পর্যাপ্ত পথবাতি রয়েছে। কিছু ছোট রাস্তায় হয়তো বাতি আরও বেশি হলে ভাল হয়। তবে, এখন যা পথবাতি রয়েছে, তাও কম নয়।” সাধারণত, পুরসভার পুরনো বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগেই পুর-নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, এ বার তা না হওয়ায় বোর্ডের মেয়াদ শেষে পুরসভা চলে গিয়েছে প্রশাসকের হাতে। এ দিকে, মেয়াদ ফুরনোর পর পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারেন না বিদায়ী বোর্ডের সদস্যরা। সেই মতো বিদায়ী কাউন্সিলররা আর সরাসরি পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত নেই। এর ফলেও কিছু সমস্যা হচ্ছে। পুজো আসছে। তার আগে অচল পথবাতিগুলো মেরামত করা না হলে পুজোর সময় সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন শহরবাসী। পুর-কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, কিছু সংখ্যক পথবাতি অচল হয়ে পড়েছে। সেগুলো মেরামতের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, শহরের বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি দেখতে পৃথক দল গঠন করা হয়েছে। পুরকর্মীদের এই দল মাসে দু’দিন করে এক-একটি ওয়ার্ডে যাবেন। পথবাতির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। কোথাও সামান্য ত্রুটি থাকলেও তা মেরামত করবেন। যাতে পরে কোনও সমস্যা না-হয়। |
|
|
|
|
|