|
|
|
|
নবান্ন-এ জল নয়, পুর-সিদ্ধান্ত ঘিরে লড়াই রাজনীতির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মেয়র মমতা জায়সবালের কথায় সভাস্থল সরিয়েছিলেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আগামী ৫ অক্টোবর থেকে যেখানে বসবেন, এইচআরবিসি বিল্ডিংয়ে সেই নতুন মহাকরণের জন্য হাওড়ার মেয়রের কাছে জল চেয়েও পেল না সংশ্লিষ্ট দফতর। এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জলঘোলা।
মেয়র জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন মহাকরণে জল দিতে হলে জলসঙ্কটে ভুগবেন এলাকাবাসী। যার বিরোধিতা করে পুরমন্ত্রী এবং এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান দু’জনেই বলছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এক ধাপ এগিয়ে পুরমন্ত্রীর হুমকি দিয়ে রেখেছেন, প্রয়োজনে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারেন তাঁরা।
হাওড়ার নতুন সচিবালয় ‘নবান্ন’য় পর্যাপ্ত জল সরবরাহের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেয় এইচআরবিসি। জেলা প্রশাসন ওই চিঠি পাঠায় পুরসভাকে। বৃহস্পতিবার মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টা ওঠার পরে শুক্রবার মেয়র সাফ জানান, ১৪তলা বাড়িটিতে পর্যাপ্ত জল দিলে হাওড়ার অধিকাংশ মানুষ জলসঙ্কটে ভুগবেন। শুকিয়ে যাবে আশপাশের দু’টি ওয়ার্ড।
এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাওড়ার বাম বোর্ড কয়েক মাস আছে। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইনত জল দিতে ওরা বাধ্য। জলের লাইনের জন্য বহু আগে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত পুরসভা লাইন দেয়নি। এর জন্য এইচআরবিসি এ বার মামলাও করতে পারে।”
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আসলে ওদের যাওয়ার সময় হয়েছে। তাই এ সব ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মেয়রের জানা উচিত, সরকারের টাকাতেই তাঁদের বেতন হয়।”
এইচআরবিসি বিল্ডিংয়ে মহাকরণ উঠে এলে যে জলের সমস্যা হবে, তা আগেই রাজ্যকে জানিয়েছিলেন সংস্থার কর্তারা। বলেছিলেন, ওই বাড়িতে জলের উৎস বলতে একটিই সাবমার্সিবল পাম্প এবং পুরসভার যে ৬ ইঞ্চি পাইপ ওই এলাকা দিয়ে গিয়েছে, তাতে সর্বদাই জলের চাপ কম থাকে। ফলে পর্যাপ্ত জল মেলে না। সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, ওই বহুতলে মহাকরণ উঠে এলে প্রতিদিন প্রায় দু’লক্ষ গ্যালন জল প্রয়োজন। কিন্তু ওই বহুতলের পরিকাঠামোয় এত জল পাওয়া অসম্ভব। যদিও পরিস্থিতি আঁচ করে সম্প্রতি বাড়িটির কাছে ডিপ টিউবওয়েল বসেছে। আর একটিও বসবে বলে এইচআরবিসি সূত্রে খবর।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, নতুন সচিবালয় যে দু’টি ওয়ার্ডে, সেই ৩৩ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে জলের সমস্যা। এ ছাড়া, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের এত জল দেওয়ার ক্ষমতা নেই। নতুন সচিবালয়ে পর্যাপ্ত জল দিতে গেলে গঙ্গার কাছে আর একটি জলপ্রকল্প ও পাম্পিং স্টেশন দরকার।
এ দিন মেয়র মমতা জায়সবাল বলেন, “নতুন সচিবালয়ে যে পরিমাণ জল প্রয়োজন, তা দিতে গেলে হাওড়ার বহু মানুষ জলসঙ্কটে ভুগবেন। সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলি হয়তো আর জলই পাবে না। মানুষের কথা ভেবে আমরা জেলা প্রশাসনকে আমাদের অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছি।”
ওই এলাকায় জলসঙ্কট দূর করা যায়নি কেন?
মেয়র বলেন, “পদ্মপুকুর প্রকল্প থেকে আসা পাইপলাইনের শেষ দিকটা ওই এলাকায় পড়েছে। ফলে জলের চাপ এমনিতেই কম। বেআইনি সংযোগ ও জল চুরির কারণে সমস্যা বেড়েছে। যে সমস্যা মোকাবিলার মতো পরিকাঠামো পুরসভার নেই। তাই জলসঙ্কট দূর করা যায়নি।” |
|
|
|
|
|