অবশেষে নাগা জঙ্গি গোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর বিরুদ্ধে সাহস করে মুখ খুলল মায়ানমারে বসবাসকারী নাগা গ্রামের গ্রামপরিষদ এবং স্থানীয় এলাকার সাংসদ। ঘোষণা করল, নাগা সেনার দাপটে তাদের এলাকার কোনও উন্নয়ন হয়নি। বরং সব ধরণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিকাশ থমকে গিয়েছে।
কয়েক দশক ধরেই অরুণাচল ও মায়ানমার সীমান্তের ওপারে—চেন, সাগায়িং এলাকায় খাপলাং গোষ্ঠী তাদের ,দর ঘাঁটি তৈরি করেছে। সেখানে বিভিন্ন সময় আলফা, এনডিএফবি-সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন আশ্রয় নিয়েছে। মায়ানমারের জঙ্গিদের সঙ্গে ঘণিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলা খাপলাংদের দাপট ওই এলাকায় প্রবল। প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম)-এর সঙ্গে তাদের এলাকা দখলের লড়াইয়ে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে থাকে এলাকা। এক দিকে বর্মি সামরিক জুনতা বাহিনীর দাপট, অন্য দিকে খাপলাংদের ‘নাগা আর্মি’র চোটপাটের মাঝে পড়ে মায়ানমারে বসবাসকারী নাগাদের বেহাল দশা। সেখানে কোনও শাসন বা প্রশাসনের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু জঙ্গিদের ভয়ে এতদিন প্রকাশে কেউ মুখ খুলত না।
এতদিন পরে মায়ানমারের চেন এলাকার গ্রামপরিষদের প্রধান পুবো ও লাহে থেরের সাংসদ ইউ সা মু বিবৃতি দিয়ে বলেন, “গত ৬০ বছরের জঙ্গি কাজকর্ম মায়ানমারে থাকা নাগাদের কোনও উন্নতি করতে পারেনি। তাদের সব উন্নয়নের সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নাগা স্বশাসিত এলাকাগুলি কয়েক দশক পিছিয়ে পড়েছে।” দুই নেতার অভিযোগ, ষাটের দশক থেকেই নাগা বাহিনীর দাপটে বহু নিরীহ মানুষ মারা গিয়েছেন। নাগা বাহিনী ও জুনতা সেনার সংঘর্ষে বহু গ্রাম জনহীন হয়ে গিয়েছে। মায়ানমার সরকার ও খাপলাংদের সংঘর্ষবিরতির পরে নাগা এলাকায় সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার জন্য মায়ানমার সরকার প্রকল্প হাতে নেয়। নেওয়া হয়েছিল আরও বেশ কিছু বিকাশমুখী পদক্ষেপ। কিন্তু খাপলাং বাহিনীর অত্যাচার, দাবি-দাওয়ার জেরে নোকলাট, আভাখং, চেনমোহো এলাকায় সড়ক ও পরিবহণ প্রকল্প বন্ধ হওয়ার মুখে। খাপলাংদের নানা আদেশ মানতে গিয়ে বিকাশ-প্রকল্পগুলিও চালানো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। |