চাষের মূল উপাদান মাটি। অথচ মাটির গুণাগুণ নিয়ে চাষিদের সচেতনতার অভাব প্রভাব ফেলছে উৎপাদনে।
ভাল ফসল ফলাতে রাসায়নিক সার কিংবা সেচের জলচাষিদের নজর থাকে মূলত এ দিকেই। কিন্তু অতিরিক্ত সার ও জলের ব্যবহারে যে ক্ষতি হচ্ছে মাটির, সে বিষয়ে খেয়াল থাকে না তাঁদের। কোন মাটিতে কী চাষ ভাল হয়, সেই বিষয়ে ধারণাও নেই বেশিরভাগ চাষির। জেলার অন্যান্য মহকুমার মত এই সমস্যা কালনা মহকুমারও।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রতিটি মাটিরই নিজস্ব চরিত্র রয়েছে। সেই অনুযায়ী ফসল ফলালে স্বাভাবিকভাবেই ভাল হবে উৎপাদন। কিন্তু চাষিদের অনেকেই কোন মাটিতে কোন ফসল ভাল হবে সেটা জেনে চাষ করে না। কালনা মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা নিলয় কর বলেন, “মাটিতে রাসায়নিক সারের বেশি ব্যবহারে অনেক সময়ে মাটির অম্লত্ব বেড়ে যায়। এর ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি কমে যায়। তখন মাটি শোধনের প্রয়োজন।”
মাটির বিষয়ে সচেতনতার অভাব স্পষ্ট চাষিদের কথাতেও। কালনা-১ ব্লকের আলুচাষি তপন ঘোষ বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষেরা যেভাবে চাষ করে এসেছে আমরা সেভাবেই চাষ করছি। এতে কখনও লাভ হয়, কখনও লোকসান।” মন্তেশ্বরের চাষি ইমানুল শেখ বলেন, “ছোট থেকেই শুনে আসছি আমাদের এলাকায় ধান ভাল হয়। তাই ধান চাষ করি।” ধানের বদলে অন্য ফসল চাষ করলে বেশি লাভ হবে কি না সে বিষয়ে ধারণা নেই তাঁর।
চাষিদের সচেতন করার জন্য কর্মীর অভাব থাকায় বাড়ছে সমস্যা। কালনা মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার ৪৭টি পঞ্চায়েতের কৃষিকাজ দেখাশোনার জন্য রয়েছে মাত্র ১৩ জন কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক। কর্মী ঘাটতির কথা মেনে মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপন কুমার মারিক বলেন, “সারা বছর সরকারি উদ্যোগে নানা আলোচনা সভা হয়। সেখানে মাটি নিয়ে চাষিদের সচেতন করা হয়।” |