নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
আইনি জটিলতায় থমকে গিয়েছে আসানসোলের ৬০ ফুট রাস্তা নির্মাণের কাজ। সমস্যায় পড়েছেন এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। অবিলম্বে কাজ শুরু করার দাবি জানিয়ে তারা শুক্রবার এডিডিএ-র দফতরে বিক্ষোভ দেখান। সমস্যা মেটাতে ছ’দিনের সময় চেয়েছেন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান।
আসানসোল পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইসমাইল লাগোয়া বেঙ্গল হোমিওপ্যাথি কলেজ থেকে এস বি গড়াই রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত ৬০ ফুট চওড়া কিলোমিটার খানেক একটি কাঁচা রাস্তা আছে। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তাটি কাঁচা। অথচ রাস্তার আশপাশে ঘন বসতি রয়েছে, পাঁচ হাজার পরিবারের যাতায়াতের ভরসাও এই রাস্তাই। এডিডিএ সূত্রে খবর, আসানসোলে জিটি রোডের বিকল্প একটি রাস্তা নির্মাণ করার জন্য এই ৬০ ফুট রাস্তার পরিকল্পনা করা হয় ১৯৮৬ সালে। পরিকল্পনা ছিল, কালিপাহাড়ির কাছ থেকে রাস্তাটি শুরু হয়ে বার্নপুর রোডে এসে মিশবে। জমি অধিগ্রহণও শুরু করে এডিডিএ। ১৯৮৬ সালে ইসমাইল সংলগ্ন হোমিওপ্যাথি কলেজ এলাকায় প্রচুর জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ওই এলাকায় জনবসতি গড়ে ওঠে। অধিগৃহীত জমিতে মোরাম ফেলে যাতায়াতের উপযোগীও করা হয়। |
কিন্তু বছর কয়েক আগে এই রাস্তাটি কালিপাহাড়ি থেকে শুরু করার পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। এই অবস্থায় বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী হোমিওপ্যাথি কলেজ থেকে এস বি গড়াই রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত নতুন গড়ে ওঠা বসতি এলাকার রাস্তাটুকু তৈরির উদ্যোগ নেন এডিডিএ কর্তৃপক্ষ। দিন পনেরো আগে রাস্তা নির্মাণের কাজও শুরু করা হয়। কিন্তু বুধবার থেকে আচমকা রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় রামবিষ্ণু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খানাখন্দে ভরা কাঁচা রাস্তায় চলাচল করতে পারছি না। হঠাৎ করে এডিডিএ কর্তৃপক্ষ রাস্তা বানানো বন্ধ করলেন কেন জানি না।” আর এক বাসিন্দা অনিল মিস্ত্রি বলেন, “প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। এডিডিএ-র কাছে কাজ বন্ধের কারণ জানতে চাইছি।” তাঁদের ক্ষোভ, সামনে পুজো। সব রাস্তা সংস্কার হচ্ছে। অথচ কাজ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে গেল তাঁদের এলাকায়।
পুরসভা ও এডিডিএ দফতরে গিয়ে এ প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে শুক্রবার কয়েকশো বাসিন্দা ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে এডিডিএ দফতরে বিক্ষোভ দেখান। সংস্থার চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কাজ থামানোর কারণ জানতে চাওয়া হলে নিখিলবাবু জানান, এই রাস্তা নির্মাণে যে সব জমিদাতা জমি দিয়েছেন তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেছেন। তাঁদের দাবি, প্রায় ২৭ বছর আগে জমি অধিগ্রহণ হলেও এতদিন রাস্তা বানানো হয়নি। জমি অধিগ্রহণের সময় যে ক্ষতিপূরণ মিলেছে তা আজকের দিনে খুবই কম। তাই এখন রাস্তা বানাতে হলে বর্তমান বাজারদর মূল্যে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নিখিলবাবু বলেন, “আমি বুধবার পর্যন্ত সময় চেয়েছি। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে।” তিনি আরও জানান, ওই অঞ্চলের উন্নতির জন্যই রাস্তার কাজে হাত দিয়েছে এডিডিএ। কিন্তু আইনের কথা তো শুনতেই হবে। |