পুরুলিয়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়ে ফের গোলমাল
ড়ুয়াদের ঝগড়া থামাতে গিয়ে তাদের হাতেই আক্রান্ত হলেন ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায় কয়েক জন ছাত্রীকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সামনেই মেঝেয়ে ফেলে পেটায় সহপাঠী ছাত্রেরা বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার মানভূম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষায়তনের এই ঘটনায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।
পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে বিবেকানন্দ নগরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের এই আবাসিক স্কুলটির পরিচালনা নিয়ে অনেক দিন ধরেই নানা অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার জেরেই প্রশাসন স্কুল পরিচালনার জন্য কিছুদিন আগে প্রশাসক নিয়োগ করে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সঠিক পরিচালনার অভাবের প্রভাব এ বার পড়তে শুরু করেছে পড়ুয়াদের মধ্যেও। সামান্য ছুতোয় নিজেদের মধ্যে পড়ুয়াদের ঝগড়া বাধানো, প্রতিবাদ করলে মারধর, এমনকী শাসন পছন্দ না হলে ওয়ার্ডেনকে উদ্দেশ করে অসম্মানজনক কথাবার্তা এমনই নানা ঘটনা ও অভিযোগের জেরে স্কুলটিতে লেখাপড়ার সার্বিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আহত এক পড়ুয়া।—নিজস্ব চিত্র।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌচাগারের কলের লাইন বেশ কিছুদিন ধরেই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে দুটি নলকূপের উপরে সকালের দিকে কমবেশি ৬০ জন আবাসিক ছাত্রছাত্রীর চাপ থাকে। তার জেরে ঝগড়া ইদানীং নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবারও ওই বিষয় নিয়েই পড়ুয়াদের মধ্যে ঝামেলা বেধেছে। দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, “আজ সকালে খাবার সময় আমার গায়ে এঁটো লাগিয়ে দিয়েছে।” চায়নারই সহপাঠিনীর অভিযোগ, তার গলায় নখ দিয়ে আঁচড়ে দেওয়া হয়েছে।” প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, “আজ সকালে আমি ঘরে ঢুকছিলাম। তখন আমাকে মেঝেয় ফেলে মেরেছে।” সকলেরই অভিযোগ সহপাঠীদের দিকে।
ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন জাহ্ণবী মাহাতোর কথায়, “বৃহস্পতিবার সকালে কলতলায় আবাসনের দু’টি ঘরের ছাত্রীদের মধ্যে থালা ধোয়া ও মুখ ধোয়া নিয়ে ঝগড়া হয়। ছাড়াতে গিয়ে আমি নিজেই হাতে চোট পাই।” অসুস্থ এক ছাত্রীর সহপাঠী ছাত্রদের হাতে মার খাওয়া বা এক ছাত্রীর গায়ে এঁটো লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার কথাও তিনি স্বীকার করেছেন। কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, “আমি কী ব্যবস্থা নেব? উল্টে ওরা আমাকেই শাসায়! আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।”
ওই স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, ওয়ার্ডেনের রাতে ছাত্রাবাসে থাকার কথা থাকলেও তিনি থাকেন না। ছাত্রাবাসের সুপার মহীউদ্দিন আনসারি বলেন, “ওয়ার্ডেন নিজে রাতে থাকলে এ সব সমস্যার সুরাহা অনেকটাই হয়ে যায়।” দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঘনশ্যাম মাহাতো বলেন, “পড়ুয়াদের একাংশের আচরণ বিশৃঙ্খল, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ছাত্রদের হাতে ছাত্রীদের মার খাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের তো কড়া হাতে শাসন করতে পারি না!” ঘটনার জেরে এ দিন পঠন-পাঠনও ব্যহত হয়েছে। সুস্থ পরিবেশ ফেরাতে শীঘ্রই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সবুজবরণ সরকার বলেন, “আমি সদ্য ঘটনাটি জেনেছি। বিষয়টি দেখব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.