ভবসুন্দরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
বহিরঙ্গে চোখ জুড়োয়, মেলে না পরিষেবা
ঝাঁ চকচকে ভবন। চিকিৎসক-কর্মীদের আবাসনও বেশ ছিমছাম। বেশ কয়েক বিঘা দানের জমির উপর গড়ে ওঠা ভবসুন্দরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে দূর থেকে দেখলে কোনও কেতাদুরস্ত নার্সিংহোম বলে ভ্রম হয়। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরেরটা যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন, আদতে সেখানে নূনত্যম চিকিৎসা পরিষেবাটুকুও মেলে না।
বেশ কিছুদিন ধরে ওই হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক নেই। একজন নার্স থাকলেও নেই কোনও ফার্মাটিস্ট। প্রায় হাজার পনেরো মানুষ রানাঘাট-১ ব্লকের অর্ন্তগত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোনও পরিষেবা না জোটায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। এক সময় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা ছিল। প্রসূতি বিভাগও চালু ছিল। মিলত জীবনদায়ী ওষুধ। সে সব আজ অতীত। পুরোনো স্মৃতি ঘেঁটে স্থানীয় বাসিন্দা বছর ষাটেকের বিজলী বিশ্বাস বলেন, “এক সময় হাসপাতালে শয্যা ছিল। রোগী ভর্তির ব্যবস্থা ছিল। নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা ছিল। পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী ছিল। আজ সে সব কিছুই নেই।” বেশ কিছুদিন ধরে চিকিৎসকের পদ ফাঁকা পড়ে থাকায় এলাকার মানুষ আতান্তরে পড়েছেন। অথচ প্রতিদিন প্রায় শ’খানেক রোগী আসেন পরিষেবার জন্য। ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে প্রায় দিনই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রেণু বিশ্বাসকে রোগী দেখতে হয়। ‘চিকিৎসক’ রেণুদেবী বলেন, “এখানে ২৫ রকমের ওষুধ পাওয়া যায়। ছোটখাটো রোগের চিকিৎসাও হয়। জটিল রোগের ক্ষেত্রে ব্লক হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।” অবশ্য ইদানীং আর রেণুদেবী রোগী দেখছেন। চিকিৎসা করছেন নার্স। সপ্তাহে একদিন চক্ষু বিশেষজ্ঞ বিশ্বরুপ দে আসেন। তিনি বলেন, “প্রায় ২০-২৫ জন রোগী চোখ দেখাতে আসেন। হাসপাতালে ওষুধ তেমন একটা নেই। বেশিরভাগ ওষুধই বাইরে থেকে কিনে আনতে বলি।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই দশা নিয়ে স্থানীয় ন’পাড়া-মুসুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান কংগ্রেসের মঙ্গল ঘোষ বলেন, “এখানে সঠিক পরিষেবা না মেলায় মানুষকে নয় কিলোমিটার দূরের ব্লক হাসপাতাল বা পনেরো কিলোমিটার পেরিয়ে মহকুমা হাসপাতালে যেতে হয়।”
প্রায় আট দশক আগে স্থানীয় বাসিন্দা বিভূতিভূষন চক্রবর্তী তাঁর মা ভবসুন্দরীদেবীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই হাসপাতাল তৈরির জন্য ১৫ বিঘা জমি দান করেছিল। সেই জমিতে তৈরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় প্রয়াত বিভূতিবাবুর নাতি প্রেমজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “চোখের সামনে এত বিশাল জায়গায় তৈরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা হয় না। দাদু এলাকার মানুষের কথা ভেবে জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু সে উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে রানাঘাট-১ এর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বাপ্পা ঢালি বলেন, “খুব শীঘ্রই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক দেওয়া হবে। তবে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের অবস্থা ভাল। আমরা পুনরায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ‘ইনডোরে’ উন্নীত করার চেষ্টা করছি। তখন মিলবে সমস্ত রকমের ওষুধ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.