তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বুধবার দোকানপাট বন্ধ রাখলেন আরামবাগের পুরা বাজারের ব্যবসায়ীরা। শেখ সোহরাব হোসেন নামে অভিযুক্ত ওই নেতার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সকাল ৭টা-১২টা বাজার-সংলগ্ন আরামবাগ-হিয়াতপুর রাস্তা অবরোধ করেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। আরামবাগের বিধায়ক তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। বিধায়ক বলেন, “বৃহস্পতিবার অভিযুক্তের থেকে তাঁর বক্তব্য শুনে সেই ভিত্তিতে দলীয় পদক্ষেপ করা হবে। আইনের পথেও যাওয়া হবে।” পুলিশ জানায়, ব্যবসায়ীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া না গেলেও বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
পুরা বাজারে ১১০ জন ব্যবসায়ী আছেন। তাঁদের অভিযোগ, গত বছর দেড়েক ধরে নানা ভাবে সন্ত্রস্ত করে সোহরাব হোসেন ও তাঁর লোকজন টাকা, জিনিসপত্র আদায় করছে। একাধিকবার বিধায়ক-সহ দলের মহকুমা স্তরের নেতাদের বিষয়টি বলা হয়েছে। পুলিশের কাছেও কয়েক বার অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই কড়া পদক্ষেপ না করায় দৌরাত্ম্য থামেনি। |
পুরা বাজারে বন্ধ দোকানপাট।—নিজস্ব চিত্র। |
উল্টে বিধায়ককে নালিশ জানানোয় তোলাবাজেরা চড়-চাপড় মেরেছে। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক হরিপদ ঘোষ বলেন, “সোহরাবের নেতৃত্বে তাঁর দুই সাগরেদ দিলীপ হালদার ও সুমন্ত পরামানিক মঙ্গলবার রাতে আমাদের বাজারে কার্তিক কুণ্ডু নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোড়জবরস্তি ১৩ কিলো মুরগি নিয়ে যায়। কয়েক দিন আগে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই ৬ বস্তা সিমেন্ট দাবি করেছিলেন সোহরাব নিজে। না দেওয়ায় মারধর করা হয়।” হরিপদবাবুর দাবি, অভিযোগ জানালে দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ব্যবসা বন্ধ করে পথ অবরোধ করা হবে। হরিপদবাবু নিজেকে নারায়ণপুর গ্রামের তৃণমূল নেতা বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ব্যবসায়ী সংগঠনে সব রাজনৈতিক দলের মানুষই আছে। বাজারের সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে এ দিনের পদক্ষেপ না করে উপায় ছিল না। আরান্ডি ২ পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের বাসুদেব মালিক বলেন, “বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরাতে পঞ্চায়েত সক্রিয় হবে।”
কী বলছেন সোহরাব নিজে? তাঁর কথায়, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত অন্য অভিযুক্ত দিলীপ হালদার বলেন, “বছর তিনেক আগে আমি কার্তিক কুণ্ডুর দোকানে কাজ করতাম। বেশ কিছু বেতনের টাকা তিনি দেননি। মুরগি নিয়ে সেই টাকাই শোধ করেছি।” কার্তিকবাবু অবশ্য বলেন, “একেবারে কাল্পনিক গল্প সাজানো হয়েছে।” |