নয়া মহাকরণের সামনেই হবে বাস টার্মিনাস
ন্দিরতলায় নয়া সচিবালয়ের সামনে তৈরি হচ্ছে বাস টার্মিনাস। বুধবার জায়গাটি ঘুরে দেখেন পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা। নয়া টার্মিনাসটি তৈরি হলে এক দিকে যেমন সচিবালয়ে যাতায়াতের সুবিধা হবে, তেমনই হাইকোর্টের নির্দেশ মতো এসপ্ল্যানেড থেকে টার্মিনাস তোলার কাজও সহজ হবে বলে মনে করছে প্রশাসন।
নতুন ওই টার্মিনাসের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ছয় একর জমি। খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। তৈরির দায়িত্বে ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)। টার্মিনাসের মেঝে কংক্রিট করার পাশাপাশি বাসকর্মী এবং যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার, রেস্তোরাঁ, বিশ্রামকক্ষ প্রভৃতি তৈরি হবে। এ দিন এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এর জন্য প্রয়োজনীয় পাঁচ কোটি টাকা আমরাই বরাদ্দ করছি। এ কারণে নতুন মহাকরণের মূল ভবনের সামনে বিদ্যাসাগর সেতুর ঢাল, অর্থাৎ র‌্যাম্পের নীচে বা পাশে কয়েকটি অংশ চিহ্নিত করা হয়েছে।” সিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রসন্নকুমার মণ্ডল বলেন, “আমরা নিগমের জন্য এক একর জায়গা চেয়েছি। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।”
প্রস্তাবিত অংশগুলি আপাতত সাফসুতরো করে কোথায়, কী হবে, তার পরিকল্পনা হয়েছে। মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ শনিবারই পরিদর্শনে যান। পরিবহণসচিব বলেন, নয়া সচিবালয়ে যাতায়াতের সুবিধার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে শিয়ালদহ, হাওড়া এবং উল্টোডাঙা স্টেশন থেকে কিছু শাটল বাস ছাড়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।
ধর্মতলার উপরে চাপ কমাতে মাস দুয়েক আগে থেকেই এসপ্ল্যানেডের বদলে হাওড়া, উল্টোডাঙা প্রভৃতি ডিপো থেকে ছাড়ছে নানা বাস। সিএসটিসি-র এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, এসপ্ল্যানেড থেকে সিএসটিসি-র দূরপাল্লার বাসগুলির মধ্যে গাদিয়াড়া, ধামাখালি, করিমপুর, রঘুনাথগঞ্জ, বালুরঘাট এবং ফুরফুরা শরিফ— এই ছ’টি রুটে দৈনিক চলে যথাক্রমে ১২, ১৪, ২, ২, ৪ এবং ৪টি বাস। এগুলি ছাড়ছে উল্টোডাঙা থেকে। কাকদ্বীপগামী ২৪টি এবং খানাকুল ও সবংগামী একটি করে বাস এসপ্ল্যানেডের বদলে এখন ছাড়ছে হাওড়া থেকে। সল্টলেক (এস ২৩), নীলগঞ্জ (এস ১১), আড়িয়াদহ (এস ৩৪), সাঁতরাগাছি প্রভৃতি যাওয়ার বাসও এখন এসপ্ল্যানেড ছুঁয়ে গন্তব্যে চলে যাচ্ছে। এগুলির কয়েকটিকে মন্দিরতলার বাস টার্মিনাসে সামনে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)-র অন্তত ২৫টি বাস নতুন মহাকরণের সামনে থেকে ছাড়বে। নিগমের চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন এ কথা জানিয়ে বলেন, “রুট ও সময়সূচি পরে চূড়ান্ত হবে। আমরাও এক একর জমি চেয়েছি নয়া সচিবালয়ের সামনে।” এখন নিগমের প্রায় ৪০টি বাস ছাড়ে এসপ্ল্যানেড থেকে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের এম ডি জয়দেব ঠাকুর বলেন, “আমরা এক একর জায়গা পাব বলে শুনেছি। তবে ওখান থেকে আমাদের বেশির ভাগ বাসই হবে দূরপাল্লার। কোন কোন বাস ছাড়বে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।”
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দূষণ রোধের যুক্তিতে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে ধর্মতলার বাস টার্মিনাস সরানোর দাবিতে জনস্বার্থের মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ২০০৭-এর ২৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ ব্যাপারে প্রথম রায় দেয়। এর পরে নানা সময়ে কখনও হাইকোর্টে, কখনও সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য এ ব্যাপারে তার সমস্যার কথা জানিয়েছিল।
এসপ্ল্যানেড থেকে সিএসটিসি-র ৮৭টি বাস ছাড়ত। এর মধ্যে ৬৫টি দূরপাল্লার, ২২টি শহরের নানা রুটের। নিগমের ডিরেক্টর অফ অপারেশনস বিশ্বজিৎ বারিক বলেন, “এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চলে দিঘা যাওয়ার বাস। দৈনিক প্রায় ২৫টি। এগুলি এসপ্ল্যানেড ছাড়াও হাওড়া, দমদম, উল্টোডাঙা, ঠাকুরপুকুর, কুদঘাট, গড়িয়া, হরিনাভি— প্রভৃতি ডিপো থেকে ছাড়বে। বাড়তি সুবিধা পাবেন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের যাত্রীরা।”
জলপথে যোগাযোগের সুযোগ বাড়াতে ইতিমধ্যে নয়া সচিবালয়ের আশপাশে হুগলি নদীর দু’ধারে পুরনো জেটি সংস্কার এবং একাধিক নয়া জেটি তৈরির কথা হয়েছে। হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি এবং দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের প্রাথমিক কাজ শুরুও করেছে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.