|
|
|
|
জলে ঝাঁপিয়ে ৬ জনের প্রাণ বাঁচালেন মন্ত্রী |
সংবাদসংস্থা • বেঙ্গালুরু |
ভিজে সপসপে জামা-কাপড়। একে একে পাড়ে তুলে আনছেন মহিলা-শিশুদের। জলে গাড়ি ডুবছে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পথ চলতি কোনও তরুণ বা আশপাশের বাসিন্দারা, এমনটা দুর্লভ নয়। কিন্তু মঙ্গলবার যে দৃশ্যের সাক্ষী রইল বেগুভাল্লি, দেখা দূরে থাক, কখনও শুনেছেন বলেও মনে করতে পারলেন না কেউ। কাল লেকের জলে একটা গাড়িকে হাবুডুবু খেতে দেখে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন কর্নাটকের প্রবীণ শিক্ষামন্ত্রী নিজেই। তাঁর চেষ্টাতেই প্রাণ বেঁচেছে তিন শিশু-সহ ছ’জনের।
|
শিক্ষামন্ত্রী
কিম্মানে রত্নাকর |
তির্থাহল্লি থেকে নিজের গাড়িতে চেপে সকাল সকাল রওনা হয়েছিলেন কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী কিম্মানে রত্নাকর। আসছিলেন বেঙ্গালুরুতে। বেগুভাল্লির কাছে তাঁদের চমকে দিয়ে প্রায় ঝড়ের গতিতে পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় একটা দুধ-সাদা গাড়ি। মিনিট পনেরো যেতে না যেতেই রত্নাকর দেখেন, ওই গাড়িটাই পড়ে রয়েছে বেগুভাল্লির লেকের জলে। খোলা জানলা দিয়ে একটু একটু করে জল ঢুকছে গাড়ির মধ্যে। ভেসে আসছে কয়েকটা কচি গলার করুণ কান্না।
আর দেরি করেননি রত্নাকর। নিজের এক রক্ষী ও তাঁর কনভয়ের দুই গাড়ির চালককে নিয়ে আসরে নামেন তিনি। বয়স পেরিয়ে গিয়েছে ষাটের গণ্ডি। তায় আবার ভোরের কনকনে ঠান্ডা জল। তাতে কী! সব কিছুকে উপেক্ষা করে, সাঁতরে তাঁরা চার জন পৌঁছে যান গাড়ির কাছে। দরজা খুলে একে একে বার করে আনেন ওই গাড়ির চালক উদয়কুমার, তাঁর স্ত্রী, মা ও তিন শিশুকে। শুধু উদ্ধার করেই থামেননি মন্ত্রী মশাই। ফোনে ডাক্তার ডেকে সকলকে দেখিয়ে, তাঁদের জলযোগের আয়োজন পর্যন্ত করেছেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে।
মন্ত্রীকে এই ভূমিকায় দেখে ঘোর কাটছে না উদয়কুমারের। বললেন, “তাঁর জন্যই রক্ষা পেলাম। কী ভাবে যে ধন্যবাদ জানাব!” জানিয়েছেন, “কারকালা থেকে ভোর চারটেয় রওনা হই। বেগুভাল্লির কাছে হঠাৎ কী ভাবে স্টিয়ারিংটা আটকে গেল। হাজার চেষ্টা করেও দুর্ঘটনা এড়ানো গেল না।” আর যাঁর জন্য এত বড় ফাঁড়া কাটল, সেই রত্নাকরের মুখে তৃপ্তির হাসি।
জনতার আওয়াজ জনপ্রতিনিধিদের কানে পৌঁছয় না, এমন অভিযোগ তো চিরকালীন। তবে কখনও এমন উলট পুরাণও হয়। নিজেকে অবশ্য ব্যতিক্রমী বলতে রাজি নন এই প্রবীণ শিক্ষামন্ত্রী। বরং হাসিমুখে জানালেন, “আমার সঙ্গীদের জন্যই এই অসাধ্য সাধন হল।” কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রীর এই শিক্ষা কী অন্যরাও নেবেন? সময়ই তার জবাব দেবে।
|
|
|
|
|
|