বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে বন্ধুদের সামনে খুন হলেন বিশ্বভারতীর এক প্রাক্তনী। তবে, ওই ঘটনাকে ঘিরে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। নিহত যুবকের নাম সবুজকান্তি মাজি। বোলপুর শহরের ভুবনডাঙায় তাঁর বাড়ি। নিহতের বাবা পাড়ুই থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই যুবক একটি বাংলা ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন। বাউল গান ও গিটারশিল্পী হিসেবেই তাঁর পরিচিতি।
নিহতের বন্ধুদের দাবি, ছিনতাইবাজদের হাত থেকে ক্যামেরা বাঁচাতে গিয়ে খুন হয়েছেন ওই যুবক। সবুজকান্তির
নিহত সবুজকান্তি মাজি
|
তিন বন্ধু-বান্ধবীও জখম হয়েছেন। কিন্তু, নিছক ছিনতাইয়ের জন্য নাকি অন্য কোন বিবাদের জেরে এই খুন, তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। সবুজকান্তির মাথার দু’পাশে ভোজালির কোপ রয়েছে। শরীরের আরও কিছু জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ঘটনার সময় সবুজকান্তির সঙ্গে থাকা বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বোলপুরের এসডিপিও সূর্যপ্রসাদ যাদব। তিনি বলেন, “নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সবুজকান্তিকে কখনও মনসা পুজো, কখনও বিশ্বকর্মা পুজার মণ্ডপের কাছে দেখা গিয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ির লোকজন খবর পান, কোপাই নদীর উপরে গোয়ালপাড়া সেতুর ধারে সবুজকান্তি গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
নিহতের বন্ধু, শান্তিনিকেতনেরই বাসিন্দা সৈকতকুমার সিংহকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর কোমর ও পায়ে চোট রয়েছে। সৈকত মুম্বইয়ে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেন। বুধবার হাসপাতালে সৈকত বলেন, “বুধবার আমার মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল। তাই আমরা বন্ধুরা (সবুজ-সহ চার জন) ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। গোয়ালপাড়া সেতুর ধারে বসে থাকার সময় হঠাৎই ভোজালি হাতে জনা পাঁচেক যুবক এসে যার কাছে যা আছে দিতে বলে। প্রতিবাদ করায় ওরা আমাদের মারধর করে। ধস্তাধস্তির সময় ওরা আমাকে সেতুর নীচে ঠেলে ফেলে দেয়।” সবুজকান্তির আর এক বন্ধু, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী হিমাদ্রি মণ্ডল জানান, ছিনতাইবাজেরা তাঁদের মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। এর পরে তাদের নজর পড়ে সবুজকান্তির ক্যামেরার দিকে। তারা ক্যামেরা ছিনিয়ে মোটরবাইকে পালানোর সময় সবুজকান্তি ধাওয়া করেন। তখনই তাঁকে ভোজালি দিয়ে কোপায় ওই দুষ্কৃতীরা। সৈকতের দাবি, তিনি কোনও রকমে সেতুর ওপর উঠে দেখেন হিমাদ্রিরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন সবুজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে চার জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। |