মদনমোহন বাড়ি চত্বরে পড়ে থাকা শতাব্দী প্রাচীন তিনটি সিন্দুক কোচবিহার রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় প্রদর্শনের জন্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাতে তুলে দিচ্ছে দেবোত্তর ট্রাষ্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে বোর্ডের সদস্য তথা কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা পুরাতত্ত্ব বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। দেবোত্তর সূত্রের খবর, মহকুমা শাসকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পুরাতত্ত্ব বিভাগের কোচবিহার রাজবাড়ির আধিকারিকদের একটি দল সিন্দুকগুলির অবস্থা সরোজমিনে দেখেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসে সিন্দুক তিনটি রাজবাড়িতে প্রদর্শনের জন্য তুলে দেওয়া হবে।
মহকুমা শাসক বিকাশবাবু বলেন, “অকেজো হয়ে পড়া সিন্দুকগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। কিছু সংস্কার ও রং করে রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় রাখা হলে পর্যটকরা তা দেখার সুযোগ পাবেন। সিন্দুকগুলির সঠিক দেখভাল হবে। সবকিছু ভেবেই পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাতে সেগুলি তুলে দিতে চিঠি দেওয়া হয়।” আর পুরাতত্ত্ব বিভাগের কোচবিহার রাজবাড়ির আধিকারিক ধীরেন্দ্র সিংহ বলেন, “রাজ আমলের স্মৃতি জড়িত ওই সিন্দুকগুলি সংস্কার করে সাজিয়ে প্রদর্শনে আমরাও আগ্রহী। চলতি মাসের ১৯ তারিখে সেগুলি হস্তান্তর হওয়ার কথা। তারপরেই দ্রুত তা প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা হবে।” |
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে ১৮৯০ সালে কোচবিহার বৈরাগি দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। রাজাদের কুলদেবতা মদনমোহনের ওই মন্দিরে ভক্তদের দানের সামগ্রী ছাড়াও বিগ্রহের অলঙ্কার সামগ্রী রাখার জন্য তিনটি সিন্দুক মন্দিরে আনা হয়। পরবর্তী সময়ে সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ায় নতুন সিন্দুকের ব্যবস্থা করেন দেবোত্তর কর্তৃপক্ষ।
কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার জানান, ১৮৯০ সালের ২১ মার্চ ওই মন্দিরে মদনমোহন বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়। সমসাময়িক সময়েই ওই সিন্দুকগুলি মন্দিরে আনা হয়েছিল বলে আমাদের ধারণা। ১০০ বছরের পুরানো সিন্দুক বিক্রি বা নিলাম না করে রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় রাখার উদ্যোগ ইতিবাচক পদক্ষেপ। লোহার তৈরি সিন্দুকগুলির উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট। চওড়া প্রায় ৪ ফুট। পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, সেই সময় কলকাতা থেকে সিন্দুক তৈরি করে আনা হত। তবে অন্তত একশো বছরের পুরানো হবেই। |