সরকারি হাসপাতালে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির নাগরিকদের পরিষেবা কী কারণে ব্যাহত হচ্ছে, তা জানতে চাইল ত্রিপুরা হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি ‘সুয়ো-মোটো’ মামলা রুজু করেছে উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি দীপক গুপ্তা এবং বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। জবাব চাওয়া হয়েছে মুখ্যসচিব, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব তথা স্বাস্থ্যসচিব, আগরতলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, জিবি হাসপাতাল সুপার, আইজিএম হাসপাতালের সুপার এবং ভিজিল্যান্স দফতরের প্রধানেরও।
হাইকোর্টের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের কর্তব্যে গাফিলতির জেরে দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ করছেন কি না, আদালতে হলফনামা দিয়ে মুখ্যসচিবকে তা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন বছরের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
সাধারণ ‘ডিউটি’র সময়ের বাইরে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক-সহ বড়মাপের কোনও চিকিৎসককে ডেকে পাঠালে তাঁরা হাসপাতালে যান কি না, তা নিয়ে স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তার জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ করছেন কি না, করলেও ভিজিল্যান্স দফতরের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছেবিচারপতিরা তারও জবাব চেয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের বাইরে রোগী দেখা রুখতে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপগুলি হাইকোর্টকে জানাতে হবে মুখ্যসচিবকে।
হাইকোর্টের বক্তব্য, ‘আর্থিক সীমাবদ্ধতা’র কারণ দেখিয়ে সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা দুর্বল করতে পারে না রাজ্য সরকার। এড়াতে পারে না দায়বদ্ধতাও। প্রয়োজনে অন্য খাতে খরচ কমিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ব্যয় করতে হবে। কী ভাবে তা করা হবে, তা ঠিক করবে সরকারই।
এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব ভি কে সত্যনারায়ণ বলেন, ‘‘উচ্চ আদালতের নোটিশ হাতে পাইনি। তা দেখার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সম্প্রতি, আগরতলার জিবি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে বিলোনিয়ার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। হাইকোর্টের নির্দেশে মৃতের মা-র ‘জবানবন্দি’ নেন বিলোনিয়ার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের বিচারক।
|