শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে ট্রেড লাইসেন্স ফি মাত্রাতিরিক্ত বাড়ানোর বিরুদ্ধে এ বার সরব হল যুব কংগ্রেস। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি বিধানসভা যুব কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানোর দাবি তোলা হয়। ৭ দিনের মধ্যে পুর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে তারা আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। যদিও শিলিগুড়ি পুরসভায় বর্তমানে ক্ষমতাসীন রয়েছে কংগ্রেসই। তাই নিজেদের ক্ষমতায় থাকা পুর বোর্ডের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের সরব হওয়াকে আলাদা ভাবে কটাক্ষ করেছে বাম এবং তৃণমূল কংগ্রেস উভয়েই। পুরসভার বিরোধী দল বামেরা ইতিমধ্যেই পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়ানো নিয়ে একাধিকবার প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূলও। সোমবার বোর্ড মিটিংয়ে ফি কমানোর প্রস্তাবও আনে কংগ্রেস। তবে দাবি মতো তা কমানো হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে আপাতত ওই প্রস্তাব পাশ স্থগিত রাখতে বলে বামেরা। পুরসভায় জোটের পুর বোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বেড়েছে। পুরসভায় ১৪ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে সংখ্যা লঘু হয়েও ক্ষমতাসীন কংগ্রেস বোর্ডকে তাই ওই প্রস্তাব পাশের জন্য বামেদের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানোর জন্য ব্যবসায়ীরাও আমাদেরকে আবেদন করেছিলেন। মেয়র পারিষদের বৈঠকে আলোচনা করে ফি কমানোর বিষয়টি বোর্ড মিটিংয়ে পেশ করা হয়েছিল। বাম কাউন্সিলররা বিষয়টি খতিয়ে দেখে মত দেবেন বলেছেন। সে জন্য আটকে রয়েছে। আশা করি শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।” এ দিন শিলিগুড়ি বিধানসভা যুব কংগ্রেসের তরফে শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ফি কমানোর দাবি তোলা হয়। সংগঠনের সভাপতি কানাইয়া পাঠক বলেন, “৭ দিনে ফি কমাতে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” তৃণমূলের অভিযোগ, চুপি সারে মাত্রাতিরিক্ত ফি বাড়ানো হয়েছে। গত ৬ মাস ধরেই তারা ফি কমানোর দাবিতে পুরসভায় ব্যানার লাগিয়েছেন। তৃণমূলের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলেন, “যুব কংগ্রেস তাদের মেয়রকে পদত্যাগ করতে বলুক। তাঁরা সংখ্যালঘু হয়ে বোর্ড চালাচ্ছেন। ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি, অবৈধ বিল্ডিং নিয়ে আমরা সরব হওয়ায় এখন ওদের হুঁশ ফিরেছে।” ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি নিয়ে এদিন যুব কংগ্রেসের ওই প্রতিবাদকে কটাক্ষ করেছেন বামেরা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “মানুষ এত বোকা নন। যুব কংগ্রেস সাংবাদিক বৈঠক করে ওই কথা না বলে তাদের মেয়রকে ব্যবস্থা নিতে বলুক। তারাই তো বোর্ড চালাচ্ছে।” তা ছাড়া গত ৯ মাস ধরে তাঁরা চুপ ছিলেন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাম কাউন্সিলররা। নুরুলবাবু জানান, কতটা ফি কমানোর প্রস্তাব বোর্ড মিটিংয়ে পেশ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। দাবি মতো তা কমানো হয়েছে কি না তা দেখেই তারা মতামত দেবেন। ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, ১০ টাকা যে ফি ছিল তা বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। আগে সর্বোচ্চ ফি যা ৫০০ টাকা ছিল তা বেড়ে ১০ হাজার টাকা হয়েছে। বিপুল পরিমাণে ফি বাড়ানো নিয়ে তাই তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। |