|
|
|
|
৩৫ হাজার কেন্দ্রের বাড়ি নেই |
ধুঁকছে অঙ্গনওয়াড়ি, বাম সরকারকেই দুষলেন মন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির অবস্থা যে আদৌ ভাল নয়, তা স্বীকার করে নিলেন বিভাগীয় মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তবে তার জন্য তিনি বিগত বামফ্রন্ট সরকারকেই দায়ী করেছেন। দ্রুত গতিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির হাল ফেরানোর আশ্বাসও দিয়েছেন মন্ত্রী। মঙ্গলবার মেদিনীপুর এসেছিলেন মন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুরের অঙ্গনওয়াড়ির হাল-হকিকত খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বেহাল দশা। বিগত ৩৪ বছরে শুধু নিজেদের লোক ঢোকানোর জন্যই এই কেন্দ্রগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমরা সমস্ত কেন্দ্রের চেহারাই পাল্টে দেব। এখানে নারী ও শিশুর পুষ্টির বিষয়টি জড়িত। তাই মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।”
রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ির সংখ্যা ১ লক্ষ ১৭ হাজার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অঙ্গনওয়াড়ির নিজস্ব বাড়ি নেই। কোথাও কেন্দ্র চলে ভাড়া বাড়িতে, কোনও ক্লাবে। অনেক জায়গায় গাছতলাতেও অঙ্গনওয়াড়ি রয়েছে। মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেন, “রাজ্যে প্রায় ৩৫ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাড়ি নেই। বাড়ি তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” গত বছর ১০ হাজার কেন্দ্রের বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। তার কাজ চলছে। চলতি বছরে আরও ২০ হাজার কেন্দ্রের বাড়ি তৈরির চেষ্টা চলছে। মন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন তহবিল থেকেই বাড়ি তৈরির চেষ্টা চলছে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সব দফতরকেই বাড়ি তৈরির জন্য পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।” এ দিন বৈঠকে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, “পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরকে এই খাতে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রীও জানান, বাড়ি তৈরির জন্য তাঁর দফতরও পদক্ষেপ করছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গাতেই জমি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যদিও মন্ত্রীর দাবি, “জমি তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সর্বত্রই প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রামীণ হাসপাতাল বা গ্রন্থাগার রয়েছে। সেখানে কিছুটা করে জমি তো খালিই পড়ে থাকে। সেই জমিতেই বাড়ি হবে।
অঙ্গনওয়াড়িতে পর্যাপ্ত কর্মীও নেই। কোনও কেন্দ্রে সহায়িকা রয়েছেন তো সাহায্যকারী নেই। আবার কোনও কেন্দ্রে সাহায্যকারী রয়েছেন তো সহায়িকা নেই। নেই পরিদর্শকও। এক একজন পরিদর্শকের উপর একগুচ্ছ কেন্দ্র পরিদর্শনের দায়িত্ব। ফলে নিয়মিত কেন্দ্রগুলি চলছে কিনা, সেখানে রান্নার মান কেমন, শিশুদের খাবার দেওয়ার পাশাপাশি পড়াশোনা করানো হচ্ছে কিনা, দেখাই হয় না? আবার এই সব কাজ দেখার জন্য সিডিপিও রয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ব্লকেই সিডিপিও-র পদ শূন্য। পশ্চিম মেদিনীপুরেই ২৯টি ব্লকের মধ্যে ১০টি ব্লকে এই পদে লোক নেই। এক একজন সিডিপিও কে ২-৩ টি ব্লকের দায়িত্ব নিতে হয়। ফলে তিনি কোনওদিন কোন অফিসে বসবেন তাও জানতে পারেন না সাধারণ মানুষ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিডিপিও পদটি যেহেতু পিএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগ করা হয় তাই এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করে কিছু করা যাবে না। তবে যতটা সম্ভব দ্রুত শুন্য পদ পূরণের চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। তবে বাকি শূন্যপদগুলি যাতে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই পূরণ করা যায় সে জন্য জোরদার পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। মন্ত্রীর কথায়, “আমরা জানুয়ারি মাসের মধ্যেই শুন্যপদগুলি পূরণ করার জন্য চেষ্টা করছি।” বৈঠকে বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শ্রীকান্ত মাহাতো, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত উপস্থিত ছিলেন। |
পুরনো খবর: ভবন হবে সব অঙ্গনওয়াড়ির |
|
|
|
|
|