ভবন হবে সব অঙ্গনওয়াড়ির
নুনে ত্রিপল চাপা। বর্ষাকাল যে। কখন বৃষ্টি আসবে কে বলতে পারে। বৃষ্টি নামলে রান্নার জো নেই। রোদ বেরোলে হাঁড়ি চাপবে উনুনে। একটি-দু’টি নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও হাজারের উপর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে খোলা আকাশের নীচে! অবশেষে তাদের নিজস্ব ভবন তৈরিতে উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন। ২০১৫ সালের মধ্যে খোলা আকাশের নীচে চলা সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রর বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য প্রতিটি ব্লকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান (আইএপি) রয়েছে, রয়েছে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ড (বিআরজিএফ)। এ ছাড়াও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন খাত থেকেও এই প্রকল্পের কাজ করা যায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত বলেন, “এ বার দ্রুত গতিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। একটি কেন্দ্রও খোলা আকাশের নীচে থাকবে না অদূর ভবিষ্যতে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৯ হাজার ৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ২ হাজার ৮৭৩টির নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। ১ হাজার ৯৯৮টি বেসরকারি জায়গায় অর্থাত্‌ ক্লাব, আটচালাতে। ২ হাজার ৩০৮টি অন্য সরকারি জায়গায় চলে। শহরাঞ্চলে ৩৩১টি কেন্দ্র চলে ভাড়া বাড়িতে। আর গাছতলায় বা খোলা আকশের নীচে চলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৮৩! যেখানে রান্নার সময় ঝড় উঠলে ধূলো পড়ে, পড়তে পারে গাছের পাতাও। এতদিনেও কেন বাড়ি তৈরি করা যায়নি। এ বিষয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের মুখে কুলুপ।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের নরেন্দ্রপুর ক্যানেল পাড়ে রয়েছে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এলাকার বাসিন্দা রবি দাসের কথায়, “বহুদিন থেকেই শুনছি, বাড়ি হবে হবে, কিন্তু কোথায় কী? খোলা আকাশের নীচে হওয়ায় বর্ষাকালে তো বেশিরভাগ দিনই রান্না হয় না।” রেবতী মাণির কথায়, “দু’জনের পরিবর্তে একজন কর্মী রয়েছেন এখানে। অন্য সময়েও সমস্যা হয়। একজন রান্না করবেন, একজন পড়ানোর কথা। কিন্তু যদি একজনই থাকেন, তাহলে তিনি কোন দিকে নজর দেবেন।” এক দিকে খোলা আকাশ, তার উপর কর্মী সঙ্কট। সমস্যার শেষ নেই। চাল নেই বলে টানা ৭ দিন রান্না হয়নি বলে অভিযোগ। এভাবেই কোনও রকমে চলছে জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি।
এ বার অবশ্য বাড়ি তৈরিতে কিছুটা ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে। গত আর্থিক বছরে আইএপি-তে ২৩৬টি অঙ্গনওয়াড়ি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিনপুর-২ ব্লকে ১৭, বিনপুর-১ ব্লকে ৪৯টি, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে ২৯টি, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকে ২০টি, শালবনিতে ৩২টি, নয়াগ্রামে ২১টি সহ ২৩৬টি কেন্দ্রের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। চলতি আর্থিক বছরেও বিআরজিএফ থেকেও দাসপুর-১ ব্লকে ৭৪টি, মেদিনীপুর সদর ব্লকে ৩৬টি, ডেবরাতে ১৪টি ও নারায়ণগড়ে ২৬টি-সহ ১৫০টি কেন্দ্র তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার খোলা আকাশের নীচে চলা কেন্দ্রগুলির উপরেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিডিওদের কাছ থেকে রিপোর্টও চাওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই জমি না পাওয়ার কারণে খোলা আকাশের নীচে চলা কেন্দ্রগুলিতে নতুন বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলেও প্রশাসন জানিয়েছে। তাই খোলা আকাশের নীচে চলা কেন্দ্রের তালিকা তৈরির পাশাপাশি কোথায় জমি রয়েছে, তা-ও দেখা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.