জঙ্গলমহলে বাস চলাচল বাড়াতে উদ্যোগী প্রশাসন
ঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সদরের বাস যোগাযোগ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দফতর। এর জন্য নতুন ‘পারমিট’ও দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে। রুট পারমিটের জন্য আবেদন করেছেন বাস মালিকেরা। জেলা পরিবহণ দফতরের এক সূত্রে খবর, এই আবেদনগুলোর অধিকাংশ জঙ্গলমহল এলাকার। চলতি মাসে দফতরের এক বৈঠক হবে। সেখানেই নতুন পারমিটের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
জেলা পরিবহণ দফতরের সরকার মনোনীত সদস্য প্রদ্যোৎ ঘোষ বলছেন, “আমরা জঙ্গলমহলকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে মেদিনীপুরের বাস যোগাযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন রুটে নতুন বাস চালু করার চেষ্টা চলছে।” তাঁর কথায়, “আগে জঙ্গলমহল এলাকা বঞ্চিত ছিল। আমাদের সরকার এই এলাকার উন্নয়নে সব রকম পদক্ষেপ করছে। বাস যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিরও চেষ্টা চলছে। যত বেশি নতুন রুটে বাস চলবে, ততই স্থানীয় মানুষ উপকৃত হবেন।” দফতর সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই বেলপাহাড়ি-কাঁথি রুটে একটি বাস চালু হতে পারে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। বিস্তীর্ণ এলাকায় পাকা রাস্তাই নেই। মোরাম কিংবা মাটির রাস্তা ভরসা। একাংশ পাকা রাস্তা আবার দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি। ফলে, আশপাশের গ্রামের মানুষ চরম সমস্যায় পড়েন। যাতায়াতের জন্য ট্রলি, ছোট গাড়ির উপরই ভরসা করতে হয়। এর ফলে, যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশি সময়ও লাগে। সাধারণ মানুষের সমস্যা এড়াতে পাকা রাস্তা নেই, কিন্তু বড় মোরাম রাস্তা রয়েছে, এমন এলাকায় ইতিমধ্যে অটো-ট্রেকার চালানোর অনুমতি দিয়েছে জেলা পরিবহণ দফতর। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “গ্রাম-শহরের যোগাযোগ বাড়াতেই হবে। গ্রামের মানুষ কাজ হাতে নিয়ে দ্রুত শহরে আসতে চাইছেন। কিন্তু, যাতায়াতের মাধ্যম পাচ্ছেন না। তাঁদের সুবিধের জন্যই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অটো-ট্রেকার চালানোর বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।” পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন সব মিলিয়ে প্রায় ৮৫০টি বাস রয়েছে। যেগুলো চলাচল করে। এর মধ্যে বেশ কিছু বাস পূর্ব মেদিনীপুরে থাকে। জেলা ভাগের আগেই এই বাসগুলো পারমিট পেয়েছে। খাতায়-কলমে অবশ্য পশ্চিমে বাসের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। বাকিগুলো অচল। অর্থাৎ, আগে চলত। এখন আর চলে না। জেলার সব রুটে আবার সমান সংখ্যক বাস নেই। কোনও রুটে ১০-১৫ মিনিট অন্তর বাস মেলে। যেমন, মেদিনীপুর-দিঘা। কোনও রুটে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাস মেলে না। যেমন, ঝাড়গ্রাম-জামবনি। জেলার অন্য এলাকার তুলনায় জঙ্গলমহল এলাকায় বাসের সংখ্যা কম। যে বাস অচল হয়ে গিয়েছে, তার একাংশও আগে জঙ্গলমহল এলাকায় চলাচল করত।
এখন চলে না কেন? বাস মালিকদের বক্তব্য, এখন বাস ব্যবসায় তেমন লাভ নেই। জ্বালানি তেলের খরচ উত্তরোত্তর বাড়ছে। ফলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। জঙ্গলমহলের বেশ কিছু রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। খানাখন্দে ভর্তি। ওই সব রুটে বাস চালালে বাসের দেখভাল করতেই প্রচুর টাকা খরচ হবে। এ দিকে, ক্ষমতায় এসে জঙ্গলমহল এলাকায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে লালগড়, ঝাড়গ্রামে এসে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্প রূপায়িত হলে জঙ্গলমহল এলাকার পরিস্থিতি আমূল বদলে যাবে। সেই সঙ্গে রাস্তাঘাটেরও হাল ফিরবে বলে আশা করছেন বাসমালিকরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.