বিশ্বভারতীর উত্তরায়ণ কমপ্লেক্স থেকে এ বার চুরি গেল দু’টি চন্দন গাছ। কড়া নিরাপত্তা বন্দোবস্ত থাকা সত্বেও কী ভাবে লোহার তারের বেড়া কেটে দু’টি গাছ চুরি গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
এই উত্তরায়ণ প্রাঙ্গণ থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদক চুরির পরে ত্রি-স্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। বসানো হয়েছে ‘ক্লোজ সার্কিট টিভি’ও। তার পরেও সোমবার রাতে চন্দন গাছ চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবীণ আশ্রমিক থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী এবং এলাকার মানুষ। ঘটনার পরেই কর্তব্যে গাফিলতির জন্য বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার চার কর্মীকে সাসপেন্ড করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। জরুরি বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। |
বিশ্বভারতীর মিডিয়া ইন্টারফেস কমিটির চেয়ারপার্সন, অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন বলেন, “বিষয়টি নজরে আসার পরে উপাচার্যের নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতীর মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক ইউ পি সিংহ ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বিভাগের চার কর্মীকে সাসপেন্ড করেছেন।” তবে এখনও পুলিশে অভিযোগ করা হয়নি বিশ্বভারতীর তরফে। বীরভূমের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার উত্তরায়ণ এলাকার চৌহদ্দি ঘুরে দেখতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদেরই নজরে পড়ে, রবীন্দ্রভবন থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে থাকা জেনারেটর রুমের পাশে লোহার তারের বেড়া কাটা। দু’টি চন্দন গাছ গোড়া থেকে কাটা। ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধার হয় করাত। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রবীন্দ্র ভবনের অধ্যক্ষা তপতি মুখোপাধ্যায়। চন্দন গাছ চুরির ঘটনা বিশ্বভারতীতে নতুন নয়। ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ নোবেল পদক চুরির কথা জানাজানি হয়েছিল। ওই চুরির তদন্তের সময়েও শ্রীনিকেতনের কালীসায়র পুকুর থেকে একটি কাটা চন্দন গাছ উদ্ধার হয়। সম্প্রতি লালবাঁধ লাগোয়া বিশ্বভারতীর জমিতে থাকা একটি চন্দন গাছও কে বা কারা কেটে নিয়েছে। কোনও ঘটনারই কিনারা হয়নি। পুলিশকেও জানানো হয়নি।
বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক এবং নিরাপত্তা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দেখভালের অভাবেই এমন ঘটনা ঘটছে। কারণ, যেখানে চুরি হয়েছে ওই জেনারেটর ঘরের পাশে থাকেন দুই নিরাপত্তা কর্মী। তারের বেড়ার ধারে রয়েছে সিসিটিভি। বিশ্বভারতীর অধ্যাপকসভার সাধারণ সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য ও কর্মিসভার সভাপতি দেবব্রত সরকার বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।”
|