|
|
|
|
প্রাসাদে সংগ্রহশালা, আপত্তি বিজয় রাঙ্খলের |
আশিস বসু • আগরতলা |
ত্রিপুরার ঐতিহাসিক ‘উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ’-কে ঘিরে দানা বাঁধল বিতর্ক। এই প্রাসাদে রাজ্যের সরকারি সংগ্রহশালা তৈরির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন উপজাতি নেতা বিজয় রাঙ্খল। আগামী সপ্তাহে সংগ্রহশালাটির উদ্বোধনে উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির আগরতলায় আসার কথা। তার আগে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদকে রাজ্যের উপজাতি মানুষদের আবেগের কথা তুলে রাঙ্খল সরাসরি চিঠি লিখেছেন আনসারিকেই। চেয়েছেন তাঁর হস্তক্ষেপ।
এক সময়কার জঙ্গি নেতা রাঙ্খল এখন আইএনপিটি নামে একটি উপজাতি রাজনৈতিক দলের প্রধান। আইএনপিটি আবার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের জোট শরিকও বটে। রাঙ্খলের বক্তব্য, “সারা দেশেই বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রাসাদকে সংরক্ষণ করা হয়। ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও শতাধিক বছরের পুরনো উজ্জয়ন্ত প্রাসাদকে সংরক্ষণ করতে হবে।” তাঁর দাবি, তা না হলে ত্রিপুরার রাজপরিবারকে ঘিরে রাজ্যের উপজাতি মানুষের আবেগ ধাক্কা খাবে। ত্রিপুরার রাজ পরিবারের প্রতি রাজ্যের প্রায় সব ক’টি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের আলাদা শ্রদ্ধা, ভক্তি রয়েছে বলে আইএনপিটি প্রধানের ধারণা। প্রাসাদটিতে সরকারি মিউজিয়াম হলে, রাজ-ঐতিহ্যের প্রতি উপজাতিদের যে ধারণা, দুর্বলতা, ভাললাগা রয়েছে, তাতে আঘাত লাগবে। বিজয় রাঙ্খলের দাবি, উজ্জয়ন্ত প্রাসাদকে একটি ‘ঐতিহাসিক স্থাপত্য’ হিসেবেই সংরক্ষণ করতে হবে। |
|
পাঁচশো বছরের পুরনো উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। বাপি রায়চৌধুরীর তোলা ছবি। |
তাঁর বক্তব্য, উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন। এটা জানার পরও যদি উপ-রাষ্ট্রপতি কোনও ব্যবস্থা না নেন এবং রাজ্য সংগ্রহশালা উদ্বোধন করতে ত্রিপুরায় আসেন, তা হলে বিষয়টা উপজাতি মানুষের কাছে ‘দুঃখজনক’ হবে। নব্বইয়ের দশকে ত্রিপুরার রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে একটি ঘটনার কথাও বিজয় রাঙ্খল বর্তমান সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী দশরথ দেবের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী, অল ত্রিপুরা ট্রাইবাল ফোর্সের (এআইটিএফ) একটি শান্তি চুক্তি হয়। জঙ্গি সদস্যরা তারই ভিত্তিতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল উজ্জয়ন্ত রাজপ্রাসাদকে ‘ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধ’ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। এ কথা উল্লেখ করে বিজয় রাঙ্খল অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্য সরকার শান্তি চুক্তির অন্যতম, এই শর্তটিকে কোনও মর্যাদা দিচ্ছে না।’’
উপ-রাষ্ট্রপতিকে লেখা আইএনপিটির চিঠির কী পরিণতি হবে তা রাজ্য সরকারের এখনও জানা নেই। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিব শান্তনু দাস জানান, ‘‘উপ-রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে এখনও এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। নির্ধারিত দিনে উপ-রাষ্ট্রপতির কর্মসূচি এখনও অপরিবর্তিতই রয়েছে।’’ |
|
|
|
|
|