| শিল্পস্থাপনে মোদীর রাজ্যকে পিছনে ফেলেছে অসম |
| রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
প্রকল্প রূপায়ণে নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতকে পিছনে ফেলেছে অসম---এমনই জানাল দেশের শিল্প সংস্থাগুলির যৌথ মঞ্চ ‘অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বার অফ কমার্স’ (অ্যাসোচেম)।
ওই সংগঠনের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এ বছরের মার্চ পর্যন্ত অসমে যে সব প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল, সে গুলির মধ্যে ৭২ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে বা পুরোদমে চলছে। প্রকল্প রূপায়ণে দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে অসম।
রাজ্যওয়াড়ি শিল্পবিকাশের বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ২০০৫ থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত অসম ৭১,৩৪২ কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে। তার মধ্যে ৫১,৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। বাকি ২৮ শতাংশের মধ্যে, ২২.৫ শতাংশ প্রকল্প মার্চ পর্যন্ত ঘোষণা স্তরেই রয়েছে। পাঁচ শতাংশের কাজ কোনও কারণে আটকে গিয়েছে।
‘অ্যাসোচেম’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে হরিয়ানা। সেখানে ৮২ শতাংশ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর (৮১.৪ শতাংশ), তৃতীয় পঞ্জাব (৭৯ শতাংশ)। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই তালিকার পিছনের সারিতে রয়েছে গুজরাত। সে রাজ্যে ঘোষিত প্রকল্পগুলির মধ্যে মাত্র ৪৬ শতাংশের কাজ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও ঝাড়খণ্ডের পরিস্থিতিও একইরকম।
‘অ্যাসোচেম’-এর সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত জানিয়েছেন, দেশে প্রায় ৫২ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প থম্কে রয়েছে। তার মধ্যে ৩৪ শতাংশ ঘোষণা স্তরে আটকে রয়েছে। ৬ শতাংশ প্রকল্পের কাজ প্রাথমিক পর্যায়েই থেমে গিয়েছে। রাওয়াত বলেন, “শিল্পের ক্ষেত্রে এ ধরনের মনোভাব, প্রকল্প রূপায়ণে দীর্ঘসূত্রতা বিশ্বজোড়া আর্থিক মন্দার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই ধারা চলতে থাকলে ভারতীয় অর্থনীতির পক্ষে আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে।”
অসমে শিল্পস্থাপনে বিদ্যুতের অভাবই দায়ী বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে অসমে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৯ লক্ষ। বর্তমানে তা পৌঁছেছে ২৬ লক্ষে। গগৈয়ের হিসেবে, বর্তমানে প্রতিদিন রাজ্যে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং জমি অধিগ্রহণে সমস্যাও অসমে বড় আকারের শিল্প গঠনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বণিক মহলের বক্তব্য, জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র, লাল ফিতের ফাঁস, সরকারি নীতিতে স্বচ্ছতার অভাবের মতো কয়েকটি সমস্যার কারণেই দেশের বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে।
|
