ভোট কাটাকাটিতে পালে হাওয়া লাগবে, আশায় ফ্রন্ট
হু বছর ধরে দুবরাজপুর পুর নির্বাচনে লড়াইয়ের সমীকরণটা ছিল একের বিরুদ্ধে এক। এক দিকে থাকত বাম প্রার্থী। অন্য দিকে থাকত কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপির অলিখিত মহাজোটের প্রার্থী। কিন্তু সেই রীতি বদলে এ বারই প্রথম সব রাজনৈতিক দল আলাদা আলাদা লড়ায় ভোট কাটাকাটিতে তাদের পালে হাওয়া লাগবে এমন আশায় বুক বেঁধে পুরনির্বাচনে বামফ্রন্ট। বাম নেতাদের দাবি, অঙ্ক মিললে বেশ কয়েকটি আসনে তাঁদের মনোনীত প্রার্থীরাই জয়ী হবেন। বামেদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল অবশ্য এ সব কথায় কান দিতে নারাজ। তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, এখন আর বামেদের কিছুই নেই দুবরাজপুরে।
তবে রাজনীতির কারবারিদেরও মনে হচ্ছে বামেদের দাবি খুব একটা অযৌক্তিক নয়। কেন এমন ধারণা?
এক সময় দুবরাজপুরে যথেষ্ট শক্তিশালি ছিল বামফ্রন্ট। পুরসভায় একাধিক বার ক্ষমতা দখলও করেছে তারা। কিন্তু গত দশ বছর ধরে ক্রমশ শক্তি ক্ষয় হয়েছে বামেদের। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে বামেদের শক্তি তলানিতে ঠেকে গিয়েছিল। দুবরাজপুর পুরশহরে গত পুরভোটে মোট ১৫ আসনের ৫টি (তিন জন মহিলা) বামফ্রণ্ট দখল করলেও প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ বাম প্রার্থীরা। বছর খানেকের মধ্যে দুবরাজপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের (বর্তমানে ৫) কাউন্সিলর ফব-র প্রহ্লাদ দত্তের মৃত্যুর পর থেকে সেখানে আর উপনির্বাচন না হওয়ায়, ওয়ার্ডের উন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। একই ভাবে সে বার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টপাধ্যায়কে হারিয়ে সিপিএমের মধুসূদন কুণ্ডু বিজয়ী হলেও (দল থকে বহিষ্কৃত বা অপসৃত এটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে) আশ্চর্যজনক ভাবে নির্লিপ্ত থেকে যান গত পাঁচ বছরই।
প্রতীকী। বেহাল রাস্তার পুরভোটের ছায়া। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
পুর-পরিষেবাকে ঘিরে ক্ষুব্ধ ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও। বাকি সিপিএমের তিন মহিলা কাউন্সিলররা বিদায়ী কংগ্রেস পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডের কথায় ওঠেন বসেন বলে গুঞ্জন ছিল। ফলে বামেদের ভাব মূর্তি যথেষ্ট ধাক্কা খেয়েছিল। রাজনৈতিক দল বা দুবরাজপুরের মানুষ কেউই বামেদেরকে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে চাইছিলেন না। খোদ বাম নেতাদের মধ্যেও পুরভোট নিয়ে ততটা আত্মবিশ্বাস ছিল না। কিন্ত হঠাৎ বিদায়ী কংগ্রেস পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে-সহ বেশ কয়েকজন বিদায়ী কংগ্রেস কাউন্সিলররা দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই সমীকরণ বদলাতে শুরু করে।
কী ভাবে? পুরবাসীরা ভেবাছিলেন দুবরাজপুর শহরে এ বার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবে তৃণমূলই। কিন্তু রাতারাতি দল বদল হওয়ায় সকলের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল এ বার লড়াই জমবে না। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল, ঘর ভেঙে যাওয়ার পর শক্তি জুটিয়ে তৃণমূলের মতো ১৬টি ওয়ার্ডে তাদের প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। ১১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপিও। ফলে এতদিন যে লড়াই ছিল মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে, সেই মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে এ বার তাদের লড়তে হচ্ছে না। বরং দক্ষিণপন্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়লে নিজেদের ভোটই কাটাকাটি করবে। আর সেটারই ফায়দা তুলতে চাইছে বামফ্রন্ট। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অরুণ মিত্র এবং শহরের আর এক সিপিএম নেতা শীতল বাউড়িরা বলছেন, “যদি সন্ত্রাস না হয়, মানুষ যদি নিজেদের মত প্রকাশ করার সুযোগ পান তা হলে আমরা ভাল ফল করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.