তারের জট আর প্লাস্টিক ছাউনি, অগ্নিগর্ভ বাজার
গায়ে গায়ে লেগে একের পর এক দোকান, কারও প্লাস্টিকের ছাউনি, কারও পাকা ঘর। আর উপর দিয়ে মাকড়সার জালের মতো বিদ্যুতের তার। অর্ধশতাব্দী প্রাচীন বেনাচিতি বাজারের এটাই চেনা ছবি। যে কোনও মুহূর্তে আগুন লেগে যাওয়ার ভয় নিয়েই দিন কাটান ব্যবসায়ীরা। তবে পুজোর মুখে দৈনিক কয়েক হাজার ক্রেতার ভিড়ে ব্যবসায়ীদের এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে।
দুর্গাপুরের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ভিড়িঙ্গি মোড় থেকে বেরিয়ে গিয়েছে নাচন রোড। রাস্তার দু’পাশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় হাজার দশেক দোকান। ভিতরের দিকে রয়েছে কয়েকটা প্রাচীন বাজার। আর বাইরে রাস্তা দখল করে পসরা সাজিয়ে বসেন কয়েক হাজার হকার। বছর ষাটেক আগে এলাকার ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যেগেই গড়ে তুলেছিলেন এই বেনাচিতি বাজার। শিল্পশহর হওয়ার আগে শহরের মূল বাজার ছিল স্টেশন লাগোয়া দুর্গাপুর বাজার। কিন্তু দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা তৈরির সঙ্গে সঙ্গে ছবিটা বদলাতে থাকে। কারণ দুর্গাপুর ইস্পাত টাউনশিপ স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে, যাতায়াতও মুশকিল। টাউনশিপের গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা বেনাচিতি বাজারের রমরমা তখন থেকেই শুরু। তারপর দোকান বেড়েছে, বাজারের চেহারা বদলেছে, ষাটের দশকের হ্যাজাক, কেরোসিন ল্যাম্পের জায়গা নিয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।

জট পাকিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। বেনাচিতি বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র।
নতুন দোকানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগের তারও। ফলে একেক জায়গায় রীতিমতো জটলা হয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের শুরুটাই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নাচন রোডের ধারে বলাই মার্কেটের গায়ে আছে এমনই এক তারের জটলা। উপরে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন। তার নীচেই দুটি ট্রান্সফর্মার থেকে ৪৪০ ভোল্টের অজস্র লাইন বেরিয়েছে। ট্রান্সফর্মারের নীচেই রয়েছে অস্থায়ী কাপড়ের দোকান। বাজার জুড়ে এরকম একাধিক তারের জটলা ছড়িয়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, কোনও ভাবে সর্ট সার্কিট হলেই আগুন ধরে যেতে পারে দোকানে। আর তা থেকে পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু ট্রান্সফর্মার থেকে তেল চুঁইয়ে পড়ছে। বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, তেল চুঁইয়ে পড়ার মানে ‘ওভারলোডিং’। দফতরের কর্মীরাই জানান, পুজোর মুখে অস্থায়ী সংযোগ নেওয়ার ধুম পড়ে। বাড়ে ওভারলোডিং। ফলে যে কোনও দিনই অগ্নিসংযোগ ঘটতে পারে।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উড়ে আসা পলিথিন, বিজ্ঞাপনের ঝুলন্ত ফেস্টুনের অংশ, পাখির মুখ থেকে পড়ে যাওয়া কোনও তার থেকেই আগুনের ফুলকি দেখা দিতে পারে। ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। এমনকী ১১ হাজার ভোল্টের লাইন থেকে ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময়ে যে আগুনের ফুলকি বের হয় তা থেকেও বিপদের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বেনাচিতি বাজারে বিদ্যুৎ সংযোগের চাহিদা কত বাড়তে পারে তার আগাম আন্দাজ দফতরের ছিল না। ফলে প্রথমে পরিকল্পিত ভাবে লাইন টানার কাজ হলেও পরে আর তা ধরে রাখা যায়নি।” তিনি জানিয়েছেন, বেনাচিতি বাজারে ধাপে ধাপে আধুনিক বিদ্যুৎ পরিবাহী ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা দরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.