ঠিকাদার সংস্থা ও পঞ্চায়েত কর্মীদের একাংশের বোঝাপড়ায় কোচবিহারে সাংসদ তহবিলের অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকা নয়ছয়ের হদিশ পেল প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি তদন্ত কমিটি দিনহাটার নয়ারহাট গোবড়াছড়া এলাকায় ৭টি রাস্তা তৈরির কাজ খতিয়ে দেখতে গিয়ে ২০ লক্ষ টাকার বেশি নয়ছয় নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে। দিনহাটা শুকারুরকুঠি বড় আটিয়াবাড়ি-সহ জেলার কয়েকটি প্রকল্পের কাজে কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের অনুমান।
পঞ্চায়েতের এক নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে দিনহাটায় অভিযোগ দায়ের করেন ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক। বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির আরও কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিত্যে একটি ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে তা করার চিন্তাভাবনা চলছে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে সই জাল করে কোচবিহারের সাংসদ নৃপেন রায়ের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বিপুল অঙ্কের টাকা নয়ছয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জেলাশাসকের দফতরের এক কর্মীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার সূত্র ধরে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে সাংসদ তহবিলের বরাদ্দের কাজ সরোজমিনে খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গড়েন জেলাশাসক। কমিটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েত কর্মীর একাংশ ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ায় কাজ সম্পূর্ণ না করেই ঠিকাদার সংস্থা বিভিন্ন অসম্পূর্ণ প্রকল্পের পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন।
গত বুধবার সাংসদ তহবিলের তহবিলের বরাদ্দ অর্থ তুলতে সাহায্য করার অভিযোগে নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে প্রশাসন। কয়েক মাস আগে দিনহাটার নয়ারহাট গোবড়াছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই নির্মাণ সহায়ককে তুফানগঞ্জের বারকোদালি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বদলি করা হয়। দিনহাটার গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মরত থাকাকালীন তিনি ৭ রাস্তার জন্য ঠিকাদার সংস্থাকে ওই শংসাপত্র দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ঠিকাদার সংস্থাটি ২০ লক্ষ টাকাও তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ। দিনহাটার ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে ওই নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি।” পুলিশ অভিযোগ দায়েরের দু’দিন পরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কোচবিহার পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেও অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ওঁকে খোঁজা হচ্ছে।” |