হাড়ভাঙা রোগীদের অস্ত্রোপচার করার ‘সি-আর্ম মেশিন’ গত পাঁচ মাস ধরে বাক্সবন্দি হয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গুদামে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দামের মেশিনটি থাকার পরেও হাড়ভাঙা রোগীদের অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে রোগীর পরিবারের অভিযোগ। রোগীকে কলকাতা, মালদহ শহরে নার্সিংহোম রেফারের অভিযোগ উঠেছে অস্থি রোগ বিভাগের একাংশ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই হাসপাতাল সূত্রে খবর, নিয়মিত মেডিক্যাল কলেজ না আসার অভিযোগ পেয়ে অস্থি-রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে শো-কজ করে সেপ্টেম্বর মাস থেকে বেতন বন্ধ করার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন অধ্যক্ষ।
তবে ঠিক জায়গার অপারেশন থিয়েটার ও টেকনিশিয়ান না মেলায় মেশিনটি বসানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন অস্থি রোগ বিভাগের প্রধান দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যুক্তি মানতে নারাজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্র। তিনি বলেছ্, “যথেষ্ট পরিসরের ঘর দেওয়ার পরেও মেশিন বসাচ্ছে না ওই বিভাগ।” মেশিন বসানো নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানের মধ্যে এই মতবিরোধে চরম দুর্ভোগে পড়ার অভিযোগ উঠেছে মালদহ ও দুই দিনাজপুরের হাড়ভাঙা রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকদের।
জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “ওই মেশিন কেন বসানো হয়নি তা অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তিনিও দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। দ্রুত ওই মেশিন বসানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, সি-আর্ম মেশিনটি অস্ত্রোপচারে অত্যন্ত জরুরি মেশিন। মেশিনটি দেখতে ইংরেজি অক্ষর সি’র মত। মেশিনে একটি অস্ত্রোপচারের টেবিল থাকে। টেবিলের সঙ্গে একটি ক্যামেরা ও টিভি মনিটার থাকে। রোগী দেহে হাড়ের অস্ত্রোপচার করার সময় কোথায় প্লেট লাগানো হচ্ছে, কোথায় স্ক্রু লাগানো হচ্ছে, তা ঠিকমত লাগানো হচ্ছে কি না মেশিনের মাধ্যমে দেখে চিকিৎসক কাজ করেন। ৫ মাস আগে অধ্যক্ষের উদ্যোগে হাসপাতালে মেশিনটি কেনা হয়।
কলেজের অস্থিরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দেবব্রতবাবু বলেন, “মেশিনটি অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু যে ঘরটি চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে তা বসানো যাবে না। কলেজ কর্তৃপক্ষই উপযুক্ত মাপের ঘর দিতে পারছে না। টেকনিশিয়ানও মিলছে না। আমরা সেটিকে দ্রুত বসানোর চেষ্টা করছি।” শোকজ করে বেতন বন্ধ করার নির্দেশের বিষয়ে তিনি জানান, আমি এক জন প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান। আমার কাজ তো পড়ানো এবং অস্ত্রোপচার করা। যত জন ‘আরএমও’ থাকার কথা নেই। আমাকে রাতে ডিউটি করতে হচ্ছে। রোগীদের ড্রেসিং করতে হচ্ছে। তাই কলকাতায় এসেছি। অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলব। নির্দেশ প্রত্যাহার না করলে আদালতে যাব।” |