নদীর পাড়, বাঁধের ভাঙন কিংবা গঙ্গা থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলার বিষয়ে প্রতিনিয়ত নজরদারি চলাতে বিশেষ সাইকেল বাহিনী তৈরি করবে রাজ্য সেচ দফতর। এ কথা জানিয়েছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেচমন্ত্রীর মতে, বাঁধ ও নদীর পাড়ের ভাঙনের বিষয়ে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার বিষয়টি যেমন ঠিক, তেমন এটাও সত্যি যে, নজরদারির অভাবের জন্যই নদীর পাড়ের ভাঙন, বেআইনি নির্মাণ ও গঙ্গা থেকে যথেচ্ছ বালি তোলার বিষয়ে সময় মতো খবর পৌঁছচ্ছে না আধিকারিকদের কাছে। ফলে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও যথেষ্ট দেরি হয়ে যাচ্ছে। সে জন্যই সাইকেল বাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত। মন্ত্রী জানান, দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের নিয়েই এই বাহিনী তৈরি করা হবে। এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে এই বিশেষ বাহিনী চালু হবে।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে মোট ১০ হাজার ৪২০ কিমি এলাকা জুড়ে নদীবাঁধ রয়েছে। এ ছাড়াও অসংখ্য ছোট ছোট বাঁধ আছে। এত দিন পর্যন্ত দফতরের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং এসডিও-রা এই সব বাঁধ ও নদীর পাড়ের অবস্থা খতিয়ে দেখতেন। কিন্তু তাঁদের পক্ষে প্রতিদিন পরিদর্শন করা সম্ভব হত না। ফলে, কখন কোথায় অবস্থার অবনতি ঘটছে তা জানতে দেরি হয়ে যেত। এর ফলেই সম্প্রতি বাঁধ ভেঙে পাঁশকুড়ার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়।
আবার মালদহের ভুতনির চর, ডোমহাট, শিমুলতলা এবং মুর্শিদাবাদের হুসেনপুর, হাসানপুর, কুলির চর, ইসলামপুর, কান্দি, কামালপুর-সহ যে সমস্ত এলাকায় ভাঙন ও বন্যার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে, সেখানকার প্রতিদিনের চিত্রটাও বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। আবার গঙ্গা থেকে বালি তোলাও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।
রাজীববাবু জানান, নজরদারি বাহিনীর জন্য ৬৪০ জন কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রত্যেককেই এক মাস হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতিদিন তাঁরা সাইকেল নিয়ে ঘুরে ভাঙন, নদী পাড়ে অবৈধ নির্মাণ, বালি তোলার বিষয়ে নজরদারি চালিয়ে দিনের শেষে ‘রেকর্ড বুক’-এ তার রিপোর্ট লিখে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে জমা দেবেন। মন্ত্রী বলেন, “এই সমস্ত কাজের পাশাপাশি বাঁধ ও ব্যারাজ থেকে কখন জল ছাড়া হবে, সেই বিষয়েও খোঁজখবর রাখবে ওই বিশেষ বাহিনী। তাতে গ্রামের মানুষের পক্ষেও খবর পাওয়া সুবিধা হবে।” |