দিন পাঁচেক পর চাকদহ পুরসভার ভোট। তার আগে পাঁচ বছরের বাম পরিচালিত পুরসভার কাছ হিসেব মেলাতে ব্যস্ত ভোটাররা।
পুর এলাকা ঢুঁড়ে প্রায় সর্বত্রই নিকাশি ব্যবস্থায় বেহাল চিত্র ধরা পড়ে। রেল স্টেশনের পূর্ব ও পশ্চিমপাড়ের সব ওয়ার্ডে ড্রেনগুলির ভাঙাচোরা চেহারা স্পষ্ট। প্রত্যেক ওয়ার্ডে উপযুক্ত নিকাশি নালা গড়া হয়নি। কোথাও বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নালাগুলি ভেঙে গেছে। নালার গা থেকে খসে গিয়েছে প্লাস্টার। পুরু শ্যাওলা জমে গিয়েছে নালার দু’পাশে। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুন্দরী মাণ্ডি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “কুড়ি দিন অন্তর পুরসভার সাফাইকর্মীরা ড্রেনগুলি সাফাই করেন। নোংরা ড্রেনে মশা-মাছি থেকে রোগ-ব্যাধিও হয়।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নালার কোনও অংশ উঁচু আবার কোনও অংশ নীচু। ফলে জল বেরোতে পারে না। এক পশলা বৃষ্টিতেই নালা উপচে রাস্তায় চলে আসে জল। চাকদহ রেলগেট এলাকা বেশি বৃষ্টিতে সোঁতার চেহারা নেয়। হাঁটু সমান জল ঠেলে যাত্রীদের স্টেশনে যেতে হয়। নালার আশপাশ ঝোড়-জঙ্গলে ঢেকে গেছে। দূর থেকে ড্রেনের অস্তিত্ব মালুম করাই দায়।
|
ড্রেনগুলিতে কোনও ঢাকনা নেই। খোলা ড্রেনের কোলঘেঁষে যাঁরা থাকেন, তাঁদের সম্বৎসর দুগর্ন্ধের দাপট সহ্য করতে হয়। পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুজিত বসু বলেন, “অল্প বৃষ্টিতে পথে ঘাটে জল জমে যায়। জমা জল সরানোর ব্যাপারে পুরসভা তেমন একটা গা করে না। দিন পনেরো ধরে জল জমে থাকে।” চাকদহ নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির নেতা মনোজ চক্রবর্তীর অভিযোগ, “নালা তৈরিতে নিম্ন মানের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়েছে।”
ভোটের আগে নালা নিয়ে নাগরিক ক্ষোভের ইস্যুকে হাতছাড়া করতে নারাজ বিরোধীরা। চাকদহ শহর তৃণমূলের সভাপতি ও আসন্ন নির্বাচনে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী দীপক চক্রবর্তী বলেন, “বিগত প্রায় তিন দশক ধরে এক নাগাড়ে পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে বামফ্রন্ট। ভেঙে পড়া নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে জেরবার শহরবাসী। বিগত বোর্ড সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে ব্যর্থ।” শাসকদলের সুরেই সুর মিলিয়ে চাকদহ শহর কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিজন দেব বলেন, “কীভাবে জল বার করতে হবে সে ব্যাপারে পুরসভা ওয়াকিবহাল ছিল না।” বামফ্রন্ট অবশ্য বিরোধীদের তোলা যাবতীয় অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে। বিদায়ী পুরপ্রধান সিপিএমের কনক মৈত্র বলেন, “পুরকর্মীরা নিয়মিত নর্দমা সাফাই করেন। মশার লার্ভা মারতে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে ড্রেন তৈরি করতে ৩ কোটি ২ লক্ষ খরচ হয়েছে। আটটি বড় নর্দমা গড়া হয়েছে, যাতে নোংরা জল বুড়িগঙ্গা খালে যেতে পারে।” |