|
|
|
|
বকেয়া আদায়ে মাইকে প্রচার পুরসভার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা কর (হোল্ডিং ট্যাক্স) বকেয়া রয়েছে। টান পড়ছে মেদিনীপুর পুরসভার কোষাগারে। কর বাবদ যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই বিদ্যুৎ বিল মেটানো, অস্থায়ী কর্মচারীদের একাংশের বেতন, জরুরি সংস্কারের মতো কাজগুলো করা হয়। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন পুর-কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রে খবর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি পুর-কর্তৃপক্ষ এক বৈঠক করেন। কোন ওয়ার্ডে কত টাকা বকেয়া রয়েছে, তা পর্যালোচনা করা হয়। ইদানীং ওয়ার্ডগুলো থেকে কর বাবদ কত টাকা আয় হচ্ছে, তাও দেখা হয়। আগেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বকেয়া কর আদায়ে বাড়ি বাড়ি নোটিস পাঠানো হবে। সেই মতো কয়েকজনকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এ বার কর্তৃপক্ষ শহরে মাইকিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চলতি সপ্তাহ থেকেই মাইকিং শুরু হওয়ার কথা। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শুরুতে বাড়ি মালিকদের কাছে আবেদন করা হবে। সময়ের মধ্যে কর না মেটালে বাড়ি মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। মহকুমাশাসক (সদর) তথা মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসক অমিতাভ দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা কর বকেয়া রয়েছে। ফলে, কিছু সমস্যা হচ্ছে। বকেয়া পুর- কর আদায়ে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে। ইতিমধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে।” |
কর-কাঁটা |
কর থেকে বছরে প্রাপ্য |
৪,০৯,৯৮,০২৮ |
মাসে প্রাপ্য |
৩৪,১৬,৫০১ |
এই মুহূর্তে বকেয়া |
৬৮,৬৬,৫৪০ |
৫ নম্বর ওয়ার্ডে বকেয়া |
৬,৬৩,৪৩০ |
৮ নম্বর ওয়ার্ডে বকেয়া |
১,৪৭,৭৪৩ |
২০ নম্বর ওয়ার্ডে বকেয়া |
৭,৫৮,১৮৪ |
* হিসাব টাকায় |
|
ধার্য কর সময় মতো আদায় হয় না বলেই যাবতীয় সমস্যা। বাড়ি মালিকদের কাছে বারেবারে দরবার করেও বকেয়া কর আদায় করা যায়নি। কম-বেশি সব ওয়ার্ডেই এক পরিস্থিতি। পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১২- ’১৩ আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পুরসভার আয় হয়েছিল ৪১,০৫,২৩৮ টাকা। পরের তিন মাসে আয় হয়েছে ১১,৩৬,৬৫৬ টাকা। অর্থাৎ, প্রথম ছ’মাসে আয়ের পরিমাণ ৫২,৪১,৮৯৫ টাকা। চলতি আর্থিক বছরে প্রথম ছ’মাসে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭,০৬,৮৫৮ টাকা। অর্থাৎ ১৪,৬৪,৯৬৩ টাকা এ বার বেশি আয় হয়েছে। তবু উদ্বেগ কাটছে না পুর-কর্তৃপক্ষের। কারণ, সেই বকেয়া কর।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। জনসংখ্যার চাপে দ্রুত পাল্টাচ্ছে শহরের চেহারা। নতুন নতুন এলাকায় বসতি গড়ে উঠছে। কিন্তু পাল্লা দিয়ে পুর-পরিষেবার মানোন্নন হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে কর বকেয়া থাকায় পুরসভাও সমস্যায় পড়েছে। জানা গিয়েছে, কর বাবদ প্রতি মাসে পুরসভার কোষাগারে যে পরিমাণ অর্থ আসে, প্রায় সমপরিমাণ চাকাই ব্যয় হয়। বিদ্যুৎ বিল মেটানো, অস্থায়ী কর্মচারীদের একাংশকে মাইনে দেওয়া, টেলিফোন বিল মেটানো-সহ বিভিন্ন খাতে টাকা খরচ হয়। ওই সূত্রের দাবি, জলের মাস্টার প্ল্যান প্রকল্প পুরোদমে চালু হলে আগামী দিনে শুধু বিদ্যুৎ বিল মেটাতেই কর বাবদ পুর-কোষাগারে যে অর্থ আসে, তার পুরোটা ব্যয় হয়ে যাবে। তখন সঙ্কট আরও বাড়বে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বকেয়া কর আদায়ের উপরই জোর দিচ্ছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। |
|
|
|
|
|