গ্রামে একটাই পশু চিকিৎসাকেন্দ্র। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক অবসর নেওয়ার পর আসেনি আর কোনও চিকিৎসক। ফলে দশ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ওই চিকিৎসাকেন্দ্র। গৃহপালিত পশুদের চিকিৎসা করানোর জন্য অগত্যা ভরসা গ্রাম থেকে দূরে ব্লক পশু চিকিৎসাকেন্দ্র বা হাতুড়ে চিকিৎসক। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ফের চালু করা হোক চিকিৎসাকেন্দ্রটি।
আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ভাতকুণ্ডা গ্রামের একমাত্র পশু চিকিৎসাকেন্দ্রটি বছর দশেক ধরে বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখানকার চিকিৎসক অবসর নেওয়ার পর আসেনি অন্য কেউ। শুধু ভাতকুণ্ডা নয়, আশেপাশের বহু গ্রামের মানুষই আসতেন ওই চিকিৎসাকেন্দ্রে। এই পরিস্থিতিতে গবাদি পশুর চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসীদের ছুটতে হচ্ছে ভাতকুণ্ডা থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে অমরাগড়ে, ব্লক পশু চিকিৎসাকেন্দ্রে। ভাতকুণ্ডার বাসিন্দা আরিফ হোসেন জানান, ভাতকুণ্ডার অধিকাংশ মানুষই কৃষি নির্ভর। |
ফাটল ধরেছে ভাতকুণ্ডা পশু চিকিৎসাকেন্দ্রের দেওয়ালে।— নিজস্ব চিত্র।
|
ফলে প্রায় সবার বাড়িতেই গরু, ছাগল, ভেড়া রয়েছে। হাঁস, মুরগি তো রয়েছেই। এদের টিকা এবং ওষুধ দেওয়ার ব্যাপারে অসুবিধা হচ্ছে গ্রামবাসীদের। আরিফ হোসেনের দাবি, অনেকেই টিকা দেওয়ার মতো বিষয়ে জানেন না। পশু চিকিৎসাকেন্দ্রটি ফের চালু হলে উপকৃত হবেন সকলেই। তিনি বলেন, “পশুদের শারীরিক অবস্থা দেখার জন্য এলাকায় কোনও প্রাণী বন্ধুও আসেন না। তাই সরকার থেকে কোনও তথ্য এলেও আমরা জানতে পারি না।”
সব সময় দূরের ব্লক পশু চিকিৎসাকেন্দ্র যাওয়া সম্ভব হয় না গ্রামবাসীর। অগত্যা দ্রুত চিকিৎসা করানোর জন্য যেতে হয় হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে। এক চাষি প্রহ্লাদ কোনারের কথায়, “এখানে যখন চিকিৎসাকেন্দ্রটি চালু ছিল তখন কোনও অসুবিধা হত না। এখন কোনও গৃহপালিত পশুর চিকিৎসা করাতে হলে খুব চিন্তা হয়।” তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে গরু-মোষ রয়েছে। সব চিকিৎসা হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে হয় না। ফলে কষ্ট করে হলেও যেতে হয় অমরাগড়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে। আর এক গ্রামবাসী রায়হান খান জানান, তাঁর বাড়িতে ছাগল রয়েছে। এদের টিকা দেওয়ার জন্য যে সমস্ত পরিষেবা দরকার, তিনি সব সময় তা পান না। তাঁর ক্ষোভ, “এই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের ব্লক পশু চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে হয়। কিন্তু সব সময় সেখানে যাওয়া সম্ভব হয় না। ভাতকুণ্ডার চিকিৎসাকেন্দ্রটি চালু হলে আমাদের গৃহপালিত পশুর চিকিৎসা সম্বন্ধে জানতে খুবই সুবিধা হবে।”
এত বছর ধরে বন্ধ চিকিৎসাকেন্দ্র। কখনও প্রশাসনকে জানানো হয়নি কেন? গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁরা অমরাগড়ের ব্লক পশু চিকিৎসাকেন্দ্রে যত বার গিয়েছেন, তত বারই এই বিষয়ে জানিয়েছেন। লাভ হয়নি কিছুই। এই প্রসঙ্গে আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিডিও দীপ্তিময় ঘোষ জানান, তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁরাই যা করার করবেন। |