রাস্তা থেকে ট্রাক চুরি গিয়েছিল। থানা-পুলিশ করেও তার হদিশ মেলেনি। গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে নিয়মমাফিক বিমা সংস্থার কাছে টাকার আবেদন জানিয়েছিলেন গাড়ি-মালিক। অভিযোগ, টাকা না দিয়ে বেসরকারি ওই বিমা সংস্থা তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করে। বহু চেষ্টা করেও টাকা না পেয়ে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন গাড়ির মালিক। আদালতের রায়ে বিমার পুরো টাকা ফেরত পেয়েছেন সুভাষচন্দ্র মণ্ডল। সঙ্গে মিলেছে ক্ষতিপূরণও।
সুভাষচন্দ্রবাবুর বাড়ি হুগলির পাণ্ডুয়া থানার খন্যান হাটতলায়। তাঁর একটি ছোট ট্রাক ছিল। তিনি জানান, বছর তিনেক আগে ট্রাক নিয়ে পাথর আনতে যাচ্ছিলেন চালক কিঙ্কর সাঁতরা। বীরভূমের মহম্মদবাজারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ধাবায় খেতে ঢোকেন চালক। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা ট্রাকটি চুরি করে পালায়। মহম্মদবাজার থানায় গাড়ি চুরির অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তদন্ত করেও গাড়ি উদ্ধার করতে পারেনি।
সংশ্লিষ্ট বহুজাতিক বিমা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, গাড়ি চুরি হলে মালিকের ৮ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। সুভাষচন্দ্রবাবুর দাবি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করে ওই টাকার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। কয়েক মাস পরে বিমা সংস্থার তরফে চিঠি দিয়ে জানান হয়, চালকের গাফিলতিতে ওই ঘটনা। ফলে বিমার টাকা দেওয়া হবে না। চিঠি পড়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে সুভাষচন্দ্রবাবুর। তিনি সংস্থার শ্রীরামপুরের শাখায় (এই শাখাতেই তাঁর চুক্তি ছিল) ফের যোগাযোগ করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ।
২০১১-র মার্চে মাসে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন ওই প্রৌঢ়। আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছয়, চুরির ঘটনায় গাড়ি চালকের কোনও গাফিলতি ছিল না। চলতি বছরের ২৩ জুলাই আদালতের প্রধান বিচারক নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তী বিমা সংস্থাটিকে নির্দেশ দেন, চুক্তি অনুযায়ী টাকা মিটিয়ে দিতে হবে সুভাষচন্দ্রবাবুকে। ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ হাজার টাকা ও মামলা চালানোর জন্য আরও ১২ হাজার টাকা দিতে হবে গাড়িমালিককে। ৩ সেপ্টেম্বর সংস্থার তরফে আদালতের সামনে পুরো টাকার চেক সুভাষবাবুকে তুলে দেওয়া হয়। বিচার ব্যবস্থার উপরে আস্থা বেড়ে গেল, এখন বলছেন আপ্লুত প্রৌঢ়। |