রান্নাঘরের জানলার গ্রিল ভেঙে হাওড়ার পাঁচলার মালিপুকুর গ্রামের একটি বেসরকারি হোম থেকে পালিয়ে গেল ১০ জন আবাসিক কিশোর। রবিবার ভোরের ঘটনা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “হোম কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে ডায়েরি করেছেন। পলাতক কিশোরদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হোমটিতে ৬ থেকে ১৮ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী এবং মাদকাসক্ত কিশোরদের রাখা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ এই সব কিশোরদের উদ্ধার করে জেলা শিশুকল্যাণ সমিতিতে (সিডব্লুসি) হাজির করে। সিডব্লুসি পরে এদের হোমে পাঠায়। বর্তমানে ওই হোমে আবাসিক সংখ্যা ১৪৭। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মাদকাসক্ত।
রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ জনা কুড়ি কিশোর হোমের রান্নাঘরের জানলার গ্রিল ভেঙে পরপর পালাতে থাকে। সেই সময় স্থানীয় মসজিদে গ্রামবাসীরা নমাজ পড়তে এসেছিলেন। তাঁরা ৯ জনকে ধরে ফেলেন এবং হোমে ফেরত পাঠিয়ে দেন। পালিয়ে যেতে সমর্থ হয় ১১ জন। এর পরেই হোম কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশ তল্লাশি করে দুপুরে হাওড়ার ধূলাগড় টোলপ্লাজা থেকে এক জনকে ধরে ফেলে।
হোম কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। জেলাশাসকের নির্দেশে হোমে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক। তিনি হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। আবাসিকদের পালানোর বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখেন। ২০১১ সালেও এই হোম থেকে ১৫ জন কিশোর পালিয়ে গিয়েছেন। ওই ঘটনায় ১৩ জনকে পুলিশ উদ্ধার করলেও দু’জনকে আর পাওয়া যায়নি। জেলা সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসকাসক্ত কিশোরদের বেশির ভাগকেই হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়। তারা মূলত প্লাস্টিকের বোতল বিক্রি করত এবং সেই টাকায় নেশা করত। নেশার টানেই তারা হোম থেকে পালায়। জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, “পুলিশকে বলা হয়েছে ওদের খুঁজে বার করতে। হোম কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে ওদের খুঁজে পাওয়া গেলে তাদের প্রতি যেন কঠোর আচরণ না করা হয়। ভবিষ্যতে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ওই আবাসিকেরা যাতে পালিয়ে যাওয়ার মনোভাব থেকে সরে আসে, তার জন্য জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক, হোম কর্তৃপক্ষ রূপরেখা তৈরি করবেন।” |