গ্রামে মানুষের দোরগোড়ায়
পরিষেবা এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে
হুগলির দিহিবাতপুর পঞ্চাননতলার কীটনাশক বিক্রেতা তাপস মিদ্দেকে এত দিন ব্যাঙ্ক পরিষেবা পেতে হাঁটতে হত ১৪ কিলোমিটার। একই রকম হাল ছিল বীজ বিক্রেতা অসিত কুমার মাইতির অথবা আটপারার চাষি রামপদ শিট-এর। সম্প্রতি তাঁদের এই দুর্গতি ঘুচেছে। এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ওই সব অঞ্চলে অতি ছোট ছোট শাখা খুলেছে। পোশাকি নাম ‘টু-ম্যান মিনি ব্রাঞ্চ’। যার দৌলতে শুধু ওই তিন জনই নন, এলাকার তিনটি পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন অত্যাধুনিক ব্যাঙ্ক পরিষেবা পাচ্ছেন।
সারা দেশে মোট ৪ কোটি মানুষকে নিজেদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। ওই মর্মে সম্প্রতি ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদে এক প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে। পূর্ব ভারতে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শাখা সম্প্রসারণের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অতুল বারভের দাবি, “বর্তমানে আমরা ১ কোটি মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছি। এটাকে চার গুণ বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পুরণের উদ্দেশ্যে শুধু শহরেই নয়, গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি আমরা।”
বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা খুলতে চায় না, এই অপবাদ ঘোচাতে এখন বদ্ধপরিকার এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। গ্রামের মানুষের আর্থিক উন্নতির লক্ষ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা বেশ কয়েক বছর আগেই গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কার্যকর করার ক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল ব্যাঙ্কগুলির প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা খোলায় অনীহা। কারণ, ব্যাঙ্কগুলির ধারণা ছিল, গ্রামে শাখা খুললে সেখান থেকে মুনাফা করা কঠিন। এই সমস্যার সমাধান করতে ‘ব্যাঙ্কিং করেসপনডেন্ট মডেল’ নামক এক প্রকল্প চালু করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ওই প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে মিনি ব্রাঞ্চ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা না-খুলেও এমন কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা যাবে, যারা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের হয়ে নিজেরাই ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ব্যবস্থা করতে পারবে। কিন্তু ওই ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরোদস্তুর ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে।
সে কথা মাথায় রেখেই এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এই মডেলের বিকল্প হিসাবে চালু করেছে দুই-ব্যক্তি শাখা বা টু-ম্যান ব্রাঞ্চ। যা ‘মিনি ব্রাঞ্চ’ হিসাবে ক্রমশ পরিচিত হচ্ছে। ওই ধরনের এক একটি শাখা চালাবেন মাত্র দু’জন কর্মী। দিহিবাতপুর পঞ্চাননতলা বা কালনায় এমনই একটি শাখা চালু করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। শুধু ওই অঞ্চলেই নয়, সারা রাজ্যে ইতিমধ্যেই ওই ধরনের ১০টি শাখা চালু করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। সারা দেশে চালু করা হয়েছে ২১৯টি শাখা। অতুলবাবু বলেন, “চলতি আর্থিক বছরেই রাজ্যে ৩০টি মিনি ব্রাঞ্চ খোলার পরিকল্পনা করেছি আমরা। ওই শাখাগুলি সব থেকে কাছের কোনও বড় শাখার সঙ্গে যুক্ত থেকেই পরিষেবা দেবে।”
মিনি ব্রাঞ্চগুলিতে কী ধরনের পরিষেবা পাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে বলতে গিয়ে অতুলবাবু জানান, এক একটি শাখা ২৫০ থেকে ৩০০ বর্গফুট জায়গার মধ্যেই করা হবে। প্রতিটি শাখাতেই কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় অনলাইন পরিষেবা পাওয়া যাবে। শাখাগুলি আকারে ছোট হলেও সেখান থেকে অত্যাধুনিক ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পাবেন গ্রাহক। টাকা জমা দেওয়া এবং তোলাই নয়, পাওয়া যাবে এটিএম, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাও। ট্রাক্টর, কৃষিঋণ-সহ বিভিন্ন ধরনের ঋণও গ্রাহকেরা পেতে পারবেন ওই সব শাখার মাধ্যমেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.