হলদিয়া পেট্রোকেম
প্রশ্ন রয়েই গেল নির্ধারিত সময়ে শেয়ার নিলাম নিয়ে
বৈঠক হল। কিন্তু অনিশ্চয়তা কাটল না। ঠিক করা গেল না দরপত্র জমা দেওয়ার দিনও। ফলে ধোঁয়াশা রয়েই গেল নির্ধারিত সময়ে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের শেয়ার নিলাম শেষ করা নিয়ে।
নিলামে সামিল হওয়ার আগে চুক্তিপত্র নিয়ে চারটি প্রশ্ন তুলেছে পেট্রোকেমের শেয়ার হাতে নিতে আগ্রহী সংস্থাগুলি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার জবাব তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে আগে আলোচনা করবে মন্ত্রিগোষ্ঠী। তারপরই উত্তর দেওয়া হবে। তাই সবকিছুর পর নির্ধারিত সময়সীমা (সেপ্টেম্বরের মধ্যে) মেনে নিলাম শেষ করা কতটা সম্ভব হবে, প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে তা নিয়ে।
আর্থিক সমস্যায় জেরবার হলদিয়া পেট্রোকেমে রাজ্য সরকারের অংশীদারি থেকে শেয়ার কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেইল, ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ওএনজিসি। দৌড়ে রয়েছে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স এবং কেয়ার্ন ইন্ডিয়ার মতো বেসরকারি সংস্থাও। এই সব সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শনিবার রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের দফতরে বৈঠক করেন পরামর্শদাতা সংস্থা ডেলয়েট ও নিগমের আধিকারিকেরা। সেখানে সম্ভাব্য ক্রেতাদের পক্ষ থেকে চারটি প্রশ্ন তোলা হয়। যার উত্তর তাঁরা পাননি।
সংস্থাগুলির প্রশ্ন (১) মার্চ পর্যন্ত যে লোকসানের বোঝা পেট্রোকেমের ঘাড়ে রয়েছে, তার কতটা দায় নতুন অংশীদারের উপর বর্তাবে। (২) আনুষ্ঠানিক ভাবে অংশীদারি হাতে আসার আগে মাঝের সময়টুকুতে পেট্রোকেমের পরিচালন পর্ষদে নতুন সংস্থার প্রতিনিধি থাকবেন কি না। (৩) চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর দাবি, রাজ্য যে ৬৭.৫০ কোটি শেয়ার বিক্রি করতে চাইছে, তার মধ্যে ১৫.৫০ কোটি আসলে তাদেরই। সে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্য কী? (৪) প্রশ্ন উঠেছে শেয়ার কেনার পাঁচ বছরের মধ্যে তা ফের বিক্রি না-করার শর্ত নিয়েও। কিন্তু এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এ দিন রাজ্যের কাছ থেকে পাননি তাঁরা। পুরো বিষয়টি আটকে গিয়েছে সেখানেই। যে কারণে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এ দিনের বৈঠকে যা দাঁড়াল, তাতে নিলামের নির্ধারিত সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া রাস্তা নেই। তবে রাজ্যের দাবি, পরামর্শদাতা সংস্থার হাতেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের কোনও ভূমিকা নেই।
কিন্তু সমস্যা হল, শেয়ার নিলামের প্রক্রিয়া যত পিছোবে, ততই সমস্যা বাড়বে পেট্রোকেমের। কারণ, এমনিতেই এ নিয়ে নিত্য টানাপোড়েনে সংস্থার দৈনন্দিন কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। তার উপর নিলাম না-হওয়া পর্যন্ত নতুন করে আর ঋণ দিতে চাইছে না ব্যাঙ্কগুলি। ফলে কাঁচামাল কিনে উৎপাদন চালু রাখাই দায় হয়ে উঠেছে সেখানে। রাজ্যের অবশ্য দাবি, সংস্থা চালাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে তারা।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে পেট্রোকেমে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে বিজ্ঞাপন দেয় রাজ্য। নিলাম প্রক্রিয়া দেখাশোনা করতে বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠীও তৈরি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। পরামর্শদাতা সংস্থা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে ডেলয়েটকে।
প্রথমে শেয়ার কিনতে ইচ্ছাপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল ১০ জুন। পরে শেয়ার কিনতে চেয়ে দাম জানানোর সময়সীমা ঠিক হয় ৩১ অগস্ট। গত মাসের শেষে ডেলয়েটের সঙ্গে এক প্রস্ত বৈঠকের পর মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা জানান, শেয়ার নিলাম শেষ হবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে নিলাম শেষ তো দূর অস্ৎ, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত দরই জমা পড়বে কি না, প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে তা নিয়েই।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.