এলাকা বন্যাপ্রবণ। রাস্তাঘাটও বেশ খারাপ। দিনরাতের যে কোনও সময় এলাকার কোনও রোগীকে কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা রামপুরহাট, সিউড়ি, বর্ধমান এমনকী কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় একটি ক্লাবকে বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন খাতে বছর চারেক আগে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক ভাবে সমস্যায় পড়েছেন মাড়গ্রাম থানার ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা পুনরায় চালু করার দাবিতে আন্দোলন করা ছাড়াও বিধায়কের নজরে এনেছেন। হাঁসন কেন্দ্রের বিধায়ক কংগ্রেসের অসিত মাল অবশ্য বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স বিধায়ক বা সাংসদরা দেওয়ার পরে আর তাঁদের কোনও দায় থাকে না।”
জানা গিয়েছে, মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রাম জনকল্যাণ সমিতিকে দেওয়া ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পড়ে রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রথম দিকে স্থানীয় একজনের খামার বাড়িতে অকেজো হয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি পড়ে ছিল। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ অ্যাম্বুল্যান্সটি চালু করার দাবিতে গ্রামে মিছিল এবং পোস্টারিং করে সরব হন। এর পর থেকে সেটিকে দুনিগ্রাম জনকল্যাণ সমিতির নিজস্ব ভবনে নিয়ে আসা হয়। দুনিগ্রাম, বালসা, কবিরাজপুর, মোতাইন, চাঁদপাড়া, কয়েম্বা, শিলগ্রাম, বাবলাডাঙা, টিঠিডাঙা, জয়চন্দ্রপুর, গোপালপুর গ্রামগুলি-সহ হাঁসন ১ ও হাঁসন ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ গ্রামের মানুষ ওই অ্যাম্বুল্যান্স থেকে পরিষেবা পেতেন। কিন্তু বর্তমানে ওই সমস্ত গ্রামের মানুষদের বেশি টাকা খরচ করে অন্য গাড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আনার মিঞা, মদন মোহন সাহুরা বললেন, “অ্যাম্বুল্যান্স চালু না থাকার জন্য শুক্রবার কীটনাশক খেয়ে অসুস্থ একজনকে রামপুরহাটে নিয়ে যাওয়ার জন্য যন্ত্রচালিত রিকশা ভ্যান ভাড়া করতে হয়েছে।”
এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা ভেবে জেলা প্রশাসন ও যে সংস্থাকে অ্যাম্বুল্যান্সটি দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত পরিষেবা চালু করতে বলেছেন বিধায়ক। রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “সাধারণত যে সংস্থাকে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয় সেই সংস্থাকে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হয়। তবে সরকারি কোনও নিয়ম বিধি আছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” দুনিগ্রাম জনকল্যাণ সমিতির সম্পাদক চাঁদ মহম্মদ বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্সটি মেরামত করার প্রয়োজন পড়েছে। ভেবেছিলাম বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন খাতে সেই কাজ করা যাবে। কিন্তু তা হবে না জেনে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আগামীকাল মেরামত করতে পাঠাব। খুব শীঘ্রই পরিষেবা চালু করা হবে।” |