সাপে কাটার চিকিৎসার জন্য ক্যানিং হাসপাতালে চিকিৎসাকেন্দ্র ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ার অনুমতি দিয়েছে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত ত্রুটির জন্য এখনই চিকিৎসাকেন্দ্র গড়া যাবে না বলে জানা গেল হাসপাতাল সূত্রে। তবে আগামী মাসে স্বাস্থ্য দফতরের সবুজ সংকেত পেলেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু হবে বলে আশ্বাস দিলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ার অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রই জমা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরে সে প্রস্তাব গৃহীতও হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসাকেন্দ্র গড়তে প্রথমেই প্রয়োজন পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। আইসিইউ, ভেন্টিলেশন ও ডায়ালিসিসের জন্য আলাদা ঘরও প্রয়োজন। তা না থাকায় এখনই চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করা যাবে না। তবে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি চালু হয়ে গেলে রাজ্যের যে কোনও জায়গার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন সেখানে। ক্যানিং হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, “ক্যানিং হাসপাতালে একটি মডেল স্নেক বাইট ট্রেনিং সেন্টার ও ট্রিটমেন্ট সেন্টার তৈরির জন্য সব কাগজপত্র স্বাস্থ্য দফতরে জমা দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শুরু হবে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় সাপের কামড়ে মৃত্যু প্রায় নিত্য দিনের বাস্তবতা। জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি অনেক দিন ধরেই চাইছিলেন ক্যানিং হাসপাতালে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হোক। এর আগে সংস্থাগুলিও মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের এক্সপার্ট গ্রুপের কাছে এ নিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল।
ক্যানিংয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি বিজন ভট্টাচার্য বলেন, “সুন্দরবনে আকছার সাপের কামড়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। সাপে কাটলে বেশিরভাগই ওঝা, গুণিনের কাছে যান। কেউটে, গোখরো, কালাচ, চন্দ্রবোড়ার মতো সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এভিএস দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না থাকায় রোগীকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাই আমরা ক্যানিংয়ে এমন একটি চিকিৎসাকেন্দ্র ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র তৈরির দাবি অনেক দিন জানিয়ে আসছিলাম। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর ওই প্রস্তাবের অনুমোদন করেছে, আশার কথা।”
স্বাস্থ্য দফতরের এক্সপার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র বলেন, “ক্যানিং হাসপাতালে এই ধরনের একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। তাই এমন চিকিৎসাকেন্দ্র চালু হলে মানুষ উপকৃত হবেন।” |