ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান আগেই চালু হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে। এ বার খড়্গপুর এবং ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালেও ওই ওষুধ দোকান চালু হতে চলেছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দোকানের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরেই জেলার এই দুই মহকুমা হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান চালু হবে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “খড়্গপুর এবং ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে যত দ্রুত সম্ভব ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালুর চেষ্টা চলছে। সেইমতো পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।”
গত বছর ডিসেম্বরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান চালু হয়। চলতি বছরের অগস্টে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালেও এই দোকান চালু হয়েছে। এর ফলে, অনেকেই কম দামে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন। ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে। সেখানে সব মিলিয়ে প্রায় ১৪০টি ওষুধ পাওয়া যায়। সঙ্গে মেডিক্যালের বিভিন্ন সরঞ্জাম। হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধের স্টক থাকলেও তা মাঝেমধ্যেই শেষ হয়ে যায়। তখন রোগীর পরিবারের লোকেদের বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হয়। ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু হওয়ার ফলে মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে সেই সমস্যা কমেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “মানুষ যাতে কম দামে ওষুধ কিনতে পারেন, সেই জন্যই রাজ্য সরকার এই ওষুধ দোকান চালু করতে উদ্যোগী হয়। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে মানুষ বাজারের থেকে অর্ধেক দামে ওষুধ পাচ্ছেন।” স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফেরাতে রাজ্য সরকার এখন সরকারি-বেসরকারি (পিপিপি মডেল) উদ্যোগে জোর দিয়েছে। এমন উদ্যোগে হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। যে সংস্থাগুলো ওই পরিকাঠামো গড়ে তুলছে, তারা সরকারি নির্দেশ মেনে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ওই নির্দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগও নেই। ফলে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয় না। বাজারে অধিকাংশ ওষুধপত্রের দামই চড়া। সেখানে জেনেরিকের বদলে ব্র্যান্ডের ওষুধ মেলে। ফলে ওষুধ কিনতে গিয়ে গরিব মানুষেরা সমস্যায় পড়েন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পিপিপি মডেলে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান খুলতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। এ জেলার খড়্গপুর এবং ঘাটাল, দু’টি মহকুমা হাসপাতালই গুরুত্বপূর্ণ। জেলার সবথেকে বড় মহকুমা খড়্গপুর। সব মিলিয়ে ১০টি ব্লক রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই নারায়ণগড়, পিংলা, ডেবরা প্রভৃতি এলাকা থেকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে রোগী আসে। অন্য দিকে, ঘাটাল মহকুমায় ৫টি ব্লক রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই চন্দ্রকোনা, দাসপুর প্রভৃতি এলাকা থেকে রোগী আসে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। এই দুই মহকুমা হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান খুললে স্থানীয় মানুষের সুবিধে হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। |