কামদুনির মা-ও চান ফাঁসি
মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে কার্যত নাওয়া-খাওয়া ঘুচে গিয়েছে তাঁর। এই তিন মাসে চেহারা আরও শীর্ণ হয়েছে। শুক্রবার দিল্লি ধর্ষণ-কাণ্ডে ফাঁসির রায় শুনে দপ করে জ্বলে উঠল কোটরে ঢুকে যাওয়া চোখ দু’টি। কামদুনির নিহত ছাত্রীর মা
চিৎকার করে বললেন, “ওদের ফাঁসি হয়েছে। আমরা মেয়ের খুনিদেরও ফাঁসি চাই।”
সম্প্রতি ছানি অস্ত্রোপচার হয়েছে নিহত ছাত্রীর বাবার। তাঁকে টিভি দেখতে বারণ করেছেন চিকিৎসক। নিজেদের বাড়িতে টিভি নেই। বেলা দু’টোর আগেই স্ত্রীকে নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন তিনি। স্ত্রী যখন উত্তেজনায় কেঁদে ফেলেছেন তখন শান্ত গলায় তিনি বলেন, “অবশেষে শান্তি পেল মেয়েটির পরিবার। আমরাও এই সাজাই চাই।”
এ দিন দিল্লি গণধর্ষণের রায় ঘোষণার সময় কার্যত রাস্তাঘাটে লোক ছিল না কামদুনিতে। গ্রামবাসীদের অনেকেই আরজি কর হাসপাতালে গিয়েছিলেন নিহত ছাত্রীর কাকার মৃতদেহ আনতে। যাঁরা বাড়িতে ছিলেন, তাঁরা সকলেই টিভির সামনে ঠায় বসে। রায় শোনার জন্য। রায় ঘোষণার পরে শুরু হয় আলোচনা। কামদুনির ঘটনায় অভিযুক্তদেরও যে একই শাস্তি হওয়া উচিত তা নিয়ে একমত সকলেই।
নজরে নির্ভয়া... দিল্লি গণধর্ষণের অপরাধীদের সাজা শুনতে টিভি-র পর্দায়
চোখ কামদুনির নিহত নির্যাতিতার পরিজনদের। সুদীপ ঘোষের তোলা ছবি।
মৃতার ছোট ভাইও এ দিন সবাইকে ডেকে ডেকে বলেছেন এই রায়ের কথা। তিনি বলেন, “ফাঁসি দিয়ে ন্যায়বিচার হল। দিল্লি সরকার মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কত সহযোগিতা করছে। আর আমাদের সরকার এখানে সাক্ষীদের নিরাপত্তাই দিতে পারছে না।” একই মত কামদুনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়েরও। রায় শুনে তিনি বলেন, “আমাদের সরকারও যদি দিল্লির সরকারের মতো উদ্যোগী হয়, তা হলে এখানেও আট জনেরই ফাঁসি হবে।”
কিন্তু এর মধ্যেই যেন কিছুটা ব্যতিক্রম মৌসুমী কয়াল। কামদুনি অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে সরব মৌসুমী এ দিন দিল্লি-কাণ্ডের রায় শুনে কেঁদে ফেললেন। চোখের জল মুছতে মুছতে তিনি বলেন, “হায় ভগবান! চারটি ছেলেকেই ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলবে! মূহুর্তের ভুলের জন্য ওরা নিজেরাও মরল, ওদের পরিবার মরল, মেয়েটি আর তাঁর পরিবারকেও মারল।” কামদুনির অভিযুক্তদের জন্য তো একই রকম শাস্তি চান? মৌসুমী বলেন, “আমি ওদেরও ফাঁসি চাই। তবে ওদের পরিবারের কথা ভেবে আমার কষ্ট হবে। পরিবারের লোকজন তো কোনও দোষ করেননি!”
কামদুনির মতোই এ দিন রায় শুনে স্বস্তি পেয়েছেন বর্ধমানের কেতুগ্রামের ধর্ষণকাণ্ডে অভিযোগকারিণী মহিলাও। তিনি বলেন, “ওই মেয়েটি এত দিনে সুবিচার পেল। আমিও চাই আমার ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে দোষীদের শাস্তি হোক।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.