বিদ্যাসাগরে রাষ্ট্রপতি-সফর |
মঞ্চে জায়গা না-পেয়ে ক্ষুব্ধ সিপিআই সাংসদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাষ্ট্রপতিকে সামনাসামনি দেখতে পাবেন না, বক্তব্য শুনতে হবে জায়েন্ট স্ক্রিনেএ নিয়ে ক্ষোভ ছিল ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে। এ বার ক্ষুব্ধের তালিকায় জুড়ল সাংসদের নামও। তিনি মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা। তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও মঞ্চে বসানো হবে না। যে গুটিকয় শ্রোতা সামনের আসনে বসবেন সেখানেই আসন তাঁর। বেজায় ক্ষুব্ধ প্রবোধবাবু তাই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “রাষ্ট্রপতির মঞ্চে যাঁরা থাকবেন তাঁদের নাম রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে অনুমোদন করাতে হয়। যে সময় রাষ্ট্রপতি ভবনে অতিথিদের নাম অনুমোদন করার তালিকা পাঠানো হয়েছিল তখন সাংসদ অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন কি না তা নিশ্চিত ছিল না। এই কারণেই করা যায়নি। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।” |
|
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। |
রবিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরেন্দ্রনাথ শাসমল হলে সপ্তম বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার কথা রাষ্ট্রপতির। কিন্তু সভাঘরটি ছোট্ট হওয়ায় মঞ্চের বাইরে বড় জোর ২০০ জন বসতে পারবেন। যার মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে জনা পঞ্চাশেকের বসার কথা। তার বাইরে কিছু অতিথিও রয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় জোর ১১০-১১৫ জন বসতে পারবেন।
কারা সেই সুযোগ পাবেন?
লটারির মাধ্যমে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ১০ জনকে, আধিকারিকদের মধ্যে ৭ জন, শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে ৭ জন, গবেষক ছাত্রদের ৩ জন ও ছাত্রদের মধ্যে ৭ জনকে বাছাই করা হয়েছে। বাকিদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একাধিক জায়েন্ট স্ক্রিনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য সরাসরি শোনানো ও দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। জয়ন্তকিশোরবাবু জানান, বি সি মুখার্জী হল, রাধাকৃষ্ণণ হল ও পুরনো বিজ্ঞান বিভাগের সামনে জায়েন্ট স্ক্রিন রাখা হবে।
এই ক্ষোভ সামলাতেই এতদিন হিমশিম খাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বার তাতে সাংসদের ক্ষোভ যুক্ত হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন সকলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ২৩ জুলাই চিঠি দিয়ে সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি মঞ্চে বসছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। আর কার্ডে নাম না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঞ্চে থাকার কথা উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর। সব মিলিয়ে ৫ জন মঞ্চে বসবেন বলে রাষ্ট্রপতি ভবনে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই কার্ড হাতে পাওয়ার পরই ‘অপমানিত’ বোধ করছেন বলে জানান প্রবোধবাবু। তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চয় তাঁদের পছন্দের মানুষকে মঞ্চে বসাতে পারেন। কিন্তু যদি অন্য এলাকার সাংসদ মঞ্চে বসতে পারেন, তাহলে স্থানীয় সাংসদ কী অপরাধ করেছেন? এটা কী আমাকে সম্মান জানানো হচ্ছে না অপমানিত করা হচ্ছে? তা জানতে চেয়েও সদুত্তর না মেলায় অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
|
পুরনো খবর: বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন রাষ্ট্রপতি |
|