চাল অমিল, পোলবায় পঞ্চাশটি
প্রাথমিক স্কুলে বন্ধ মিড-ডে মিল
চাল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হুগলির পোলবার অন্তত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিল। ফলে, বিপাকে পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার কমছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হলেও সমস্যা মিটছে না বলে অভিযোগ বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পোলবা-দাদপুর ব্লকের বিডিও ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ব্লক অফিসের পক্ষ থেকে যে ডিস্ট্রিবিউটর এত দিন স্কুলগুলিকে চাল সরবরাহ করতেন, তিনি কাজ ছেড়ে দেওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্কুলে পড়ে রয়েছে মিড-ডে মিলের বাসনপত্র। —নিজস্ব চিত্র।
নতুন এক জন ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ করা হয়েছে। তবে, তিনি বিশ্বকর্মা পুজোর আগে কাজ শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা সমস্যা দ্রুত মোকাবিলার চেষ্টা করছি।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পোলবা-দাদপুর ব্লকে মোট প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ২৫১টি। তার মধ্যে গত সপ্তাহ থেকে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে পাওনান রাধারানি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুইনান নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুপিতলা জে পি এস প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিচাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ৫০টি স্কুলে। ওই স্কুলগুলিতে শেষ চাল আসে মার্চ মাসে। তার পর থেকে মজুত চালেই চলছিল। কিন্তু গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে সেই চালও ফুরিয়ে যায়। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় মিড-ডে মিল। ওই ৫০টির বাইরে থাকা প্রাথমিক স্কুলগুলি এখনও ওই প্রকল্প চালাচ্ছে মজুত চালে। দ্রুত চাল সরবরাহ না করলে ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষও প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
গত শুক্রবার থেকে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে পাওনান রাধারানি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই স্কুলের ১৩৪ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বেশির ভাগই দিনমজুর পরিবারের। মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার ক্রমেই কমছে বলে মেনে নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ দে বলেন, “আমাদের ছাত্রছাত্রীরা দুপুরের খাবার স্কুলেই খায়। কিন্তু মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের খাওয়ার জন্য টিফিনের সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। যাতে বাড়ি গিয়ে খেয়ে তারা ফের স্কুলে আসতে পারে। কিন্তু এ ভাবে আর ক’দিন চালানো যায়! প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।” মহেশ্বরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাস বলেন, “মিড ডে মিল বন্ধ হওয়ায় আমাদের স্কুলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমছে। কবে থেকে ফের চাল পাওয়া যাবে, তা-ও নির্দিষ্ট ভাবে ব্লক প্রশাসন জানাচ্ছে না। বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী টিফিন আনা শুরু করেছে।” স্কুলে খাবার না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরাও। দিনমজুরির কাজ থাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীর বাবা-মা দুপুরে বাড়িতে থাকেন না। অনেক স্কুল টিফিনের সময় বাড়িয়ে খাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে পাঠানোয় কাজ ফেলে চলে আসতে হচ্ছে বাবা-মাকে। পাওনান রাধারানি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দেবাশিস বাগ বলে, “বাবা-মা দুপুরে মাঠে কাজ করতে যান। বাড়িতে গেলে খাবার পাওয়া যাবে না বলে স্কুলে মুড়ি নিয়ে আসছি।” সৈকত বাগ নামে ওই স্কুলেরই আর এক ছাত্র বলে, “দুপুরে এত দিন স্কুলেই পেট ভরে খাচ্ছিলাম। স্কুলে খাবার দেওয়া হচ্ছে না। মুড়ি-চিঁড়ে খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.