অনুমতি ছাড়াই কৃষিজমির চরিত্র বদল, ক্ষুব্ধ কোর্ট
রাজ্য সরকার না টাটা গোষ্ঠী— সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার এক হাজার একর জমি কার দখলে থাকবে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। সেই মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই সিঙ্গুর এলাকার জমি নিয়ে ফের মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ, ওই অঞ্চলে দেদার কৃষিজমির চরিত্র বদলানো হচ্ছে। বিষয়টি জানার পরে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
জনস্বার্থে মামলাটি করেছেন কুণাল গুহরায় নামে এক ব্যক্তি। তাঁর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হুগলির ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শুক্রবার হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করে জানান, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানা সংলগ্ন এলাকায় বহু কৃষিজমির চরিত্র বদল করা হয়েছে। সরকারি আধিকারিকের রিপোর্ট দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, সরকারের কোনও অনুমতি ছাড়াই কৃষিজমির চরিত্র বদল হয়ে হচ্ছে, এটা লজ্জার।
একটি জমির চরিত্র বদলের পরে লাগোয়া জমির চরিত্রও কী ভাবে পাল্টে যাচ্ছে, আবেদনে তার বিবরণ দিয়েছেন কুণালবাবু। তিনি জানান, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা দু’বছর ধরে সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার সামনে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিঘা জমি চাষিদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছে। সেই জমি ভরাট করা হচ্ছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই দিয়ে। ঝড়বৃষ্টিতে সেই ছাই গিয়ে পড়ছে আশপাশের চাষের জমিতে। ফলে সেখানে ফসল হচ্ছে না। এই অবস্থায় চাষিরা জলের দরে জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। বেসরকারি সংস্থা এই পদ্ধতিতে ধারাবাহিক ভাবে জমির পর জমি হাতিয়ে নিচ্ছে।
আবেদনকারীর অভিযোগ, ন্যানো কারখানার জমি সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দীর্ঘ আন্দোলন হয়েছে। এখন সেই কারখানার সামনে দাঁড়িয়েই এক শ্রেণির বেসরকারি সংস্থা অবাধে তিন-ফসলি কৃষিজমি লুঠ করে নিচ্ছে। অভিযোগ শুনে ডিভিশন বেঞ্চ জেলা ভূমি আধিকারিককে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিল।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দখল হয়ে যাওয়া জমিতে আর কৃষিকাজ করা সম্ভব হবে না। নানা কাজে ব্যবহারের জন্যই ব্যবসায়ীরা ওই সব জমি কিনেছেন। রিপোর্ট দেখে বিচারপতিরা সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? কোনও জবাব দিতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। তার পরেই বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, ওই সব জমির ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ১০ দিনের মধ্যে তা জানাতে হবে সরকারকে।
কৃষি প্রতিমন্ত্রী ও সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের নেতা বেচারাম মান্না বলেন, “আদালত যে-রায় দেবে, তা মেনে চলব।” আদালতের নির্দেশে সন্তুষ্ট কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “জমির আগের চরিত্র ফিরিয়ে দিলে তো ভালই। সেই দাবিতেই আন্দোলন করছি।” কৃষি প্রতিমন্ত্রীর নামোল্লেখ না-করলেও তিনি জমির দখলদারদের প্রশ্রয় দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন মান্নান। বলেন, “জমি-মালিকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দায়বদ্ধতা থাকলে ওখানকার যে-মন্ত্রী দখলদারদের হয়ে সওয়াল করেন, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.