নিরাপত্তায় বেসরকারি রক্ষী
‘চাপের’ মুখে নির্দেশ প্রত্যাহার পুরসভার
দুর্নীতি রুখতে মাসখানেক আগে নির্দেশ জারি করেছিল পুর প্রশাসন। কিন্তু ক্ষমতাসীন পুর প্রতিনিধিদের চাপে সেই নির্দেশ ফেরাতে হল। বিষয়টি বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের এক জায়গায় এক বছরের বেশি রাখা হবে কি না, তা নিয়ে। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হয়েছে। যদিও পুর প্রশাসন মনে করছে, এক জায়গায় বেশি দিন বহাল থাকায় নিরাপত্তার কাজে ঢিলেমি হচ্ছে। বাড়ছে দুর্নীতিও। মেয়র বলেন, “আমিই ওই নির্দেশ আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছি। রক্ষীদের বেতন কম। ওঁদের বেশি দূরে না পাঠানোই ভাল।” আর তাই আপাতত সিদ্ধান্ত হজম করছেন পুরকর্তারা। এতে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন তাঁরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভায় ৩,৩৯৬ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী আছেন। পুরসভা অনুমোদিত চারটি বেসরকারি সংস্থা তাঁদের সরবরাহ করেছে। পুরসভার বিভিন্ন দফতরে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পার্কে, স্কুলে, পাম্পিং স্টেশনে এবং গঙ্গার পাড়ে তাঁদের মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ, একই জায়গায় দীর্ঘ দিন থাকায় একদল রক্ষী মৌরসীপাট্টা শুরু করেছেন। নিরাপত্তার কাজে বিঘ্ন ঘটছে বুঝে গত ৫ অগস্ট পুর কমিশনারের নির্দেশে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেন পুর-সচিব। বলা হয়, এক বছরের বেশি একই জায়গায় থাকা রক্ষীদের স্থানান্তর করা হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পরে মেয়র-সহ কয়েক জন পুর প্রতিনিধি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। মেয়রের পাল্টা অভিযোগ, “অফিসারেরাও মৌরসীপাট্টা করেন।” তার জেরে ৭ সেপ্টেম্বর পুর সচিব ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, আগের নির্দেশ এখনই কার্যকর হবে না।
পুরসভার এক পদস্থ কর্তার কথায়, “এমন হবে আগেই আঁচ করা হয়েছিল। ওই বেসরকারি রক্ষীদের নিয়োগ থেকে পোস্টিং সবটাই নিয়ন্ত্রণ করেন ক্ষমতাসীন পুর প্রতিনিধিরা। তাই রক্ষীদের যে সরানো যাবে না, জানা ছিল।”
তা সত্ত্বেও পুর প্রশাসন ওই বিজ্ঞপ্তি জারির ঝুঁকি নিতে গেলেন কেন? পুর সূত্রের খবর, নিরাপত্তারক্ষীদের কাজ নিয়ে প্রায়ই নানা অভিযোগ জমা পড়ে পুর প্রশাসনের কাছে। যেমন, ডিউটি না করেও কয়েক জন রক্ষী দিনের পর দিন বেতন নিয়ে চলেছেন। যেখানে যত জন রক্ষী থাকার কথা, বাস্তবে তা থাকছেন না। এমনকী, না থাকা কিছু রক্ষীর নামেও বেতন তোলা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ওই রক্ষীদের বেতন দিতে বছরে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা খরচ হয় পুরসভার। কোটি কোটি খরচ হলেও কাজ কতটা হচ্ছে, তা দেখাই পুর প্রশাসনের উদ্দেশ্য। আর তা যাচাই করতে গিয়ে খোদ পুর-কমিশনার খলিল আহমেদও সম্প্রতি এমন এক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। গঙ্গার পাড়ে বাজে কদমতলা ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে।
সৌন্দর্যায়নের পরে ঘাটটির উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “দর্শনার্থীদের জন্য এই পথ দিনভর খোলা থাকবে। নিরাপত্তায় সর্বক্ষণের জন্য রক্ষী থাকবেন।” মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার পরে তিন শিফ্টে সেখানে ৩০ জন রক্ষী মোতায়েন করে পুরসভা। কিন্তু কেমন চলছে প্রহরা, তা সরেজমিনে দেখতে গিয়ে কমিশনারের নজরে পড়ে, কাগজে-কলমে একটি শিফ্টে ১০ জন রক্ষী থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ২ জন। তাঁরাও আবার দুপুরে ভাতঘুম দিতে ব্যস্ত। এর পরেই একই রক্ষীকে এক জায়গায় বেশি দিন না রেখে জায়গা বদলের ভাবনা শুরু করেন পুরকর্তারা। সেই নির্দেশ আপাতত ঝুলেই থাকল।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.