গভীর রাতে পরিবহণ দফতরের কয়েক জন কর্মীর নামে ট্রাক আটকে হেনস্থা এবং মারধর করার অভিযোগ করে, বুধবার রাত ১টা থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১০ পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন চালকেরা। কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলার পরে পুলিশ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। অভিযোগ, বুধবার রাত ১টা নাগাদ কোচবিহার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কয়েক জন কর্মী পরপর ৭টি ট্রাক দাঁড় করিয়ে চালকদের লাইসেন্স এবং ট্রাকের বিভিন্ন নথি কেড়ে নন বলে অভিযোগ। সে নথি ফেরত দেওয়ার দাবি জানালে এক ট্রাকের খালাসিকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। কেড়ে নেওয়া নথি কী ভাবে ফেরত পাওয়া যাবে, তা না জানিয়ে কর্মীরা চলেও যান বলে অভিযোগ। |
কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি এলাকায় বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
এরপরে ক্ষুব্ধ ট্রাক চালকরা অবরোধ শুরু করেন। রাত থেকে টানা অবরোধের জেরে রাস্তার দুদিকে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গাড়ির লম্বা লাইন দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য প্রশাসনের তরফে ট্রাক চালকদের কাগজপত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কিছু চালকের কাছে প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় তাদের সর্তক করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “চালকরা যে অভিযোগ করেছিলেন, তা ভিত্তিহীন। কিছু নথি চালকদের কাছে ছিল না।” অবরোধের ফলে দুর্ভোগে পড়েন তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট ও অসমগামী বাসের যাত্রীরা। টানা অবরোধ চলতে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ট্রাক চালকদের পক্ষে সরবেশ কুমার বলেন, “আমাদের সকলের কাছেই বৈধ নথি ছিল। তার পরেও এক খালাসিকে মারধর করে কাগজপত্র ছিনিয়ে নেন তারা। কী করে কাগজপত্র ফেরত পাব, তাও না বলায় অবরোধ শুরু করি।” ট্রাক চালকদের অভিযোগ, নথি আটকে রেখে অনেক সময়েই টাকা দাবি করার ঘটনা ঘটেও, এ ক্ষেত্রেও তেমনই আশঙ্কা ছিল।
কোচবিহারের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক তাপস বিশ্বাস বলেছেন, “পথকর সংক্রান্ত সঠিক নথি না থাকায় কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রাকের কাগজপত্র আটক করা হয়েছিল। ওই ঘটনার জেরে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে, ওই ট্রাক চালকেরা একজোট হয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। আমজনতার ভোগান্তির কথা ভেবে এ দিন সকালে ঘটনার কথা জানার পরেই তা ফেরত দেওয়া হয়। তবে সকলকে সর্তক করা হয়েছে। ” এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ জানায়। পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।” |