জনমত ঠেলে গড়া বোর্ড মেনে নেবে না কোর্ট
কোথাও বুলেট-বৃষ্টিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হটিয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের অভিযোগ। আবার কোথাও অভিযোগ, ভোটে জেতা প্রার্থীকে অপহরণ করে এবং নির্বাচিত অন্যদের ভয় দেখিয়ে এলাকাছাড়া করে গরিষ্ঠ পক্ষের শক্তি কমিয়ে দিয়ে বোর্ড গড়ে ফেলা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, জনগণের নির্বাচিত মতামত (ভোট) উপেক্ষা করে যে-ভাবে বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়া হচ্ছে, আদালত তা বরদাস্ত করবে না। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে সিপিএমের দায়ের করা একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ১৫টি। এ বারের নির্বাচনে সিপিএম আটটি, তৃণমূল কংগ্রেস ছ’টি এবং বিজেপি একটি আসনে জিতেছে। নিয়ম অনুযায়ী ওখানে সিপিএমেরই বোর্ড গড়ার কথা। কিন্তু পুলিশের কাছে সিপিএম অভিযোগ করে, বোর্ড গঠনের কয়েক দিন আগে তাদের দলের নির্বাচিত সদস্য পূর্ণ বর্মনকে অপহরণ করা হয়েছে। ওই ঘটনার পরে দলের নির্বাচিত অন্য সাত সদস্যও আতঙ্কে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন। সিপিএমের নির্বাচিতদের এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে ছ’জন সদস্য নিয়েই বোর্ড গঠন করে ফেলে তৃণমূল। তার বিরোধিতা করেই সিপিএমের নির্বাচিত সদস্যেরা হাইকোর্টে মামলা করেন। এই ব্যাপারে মহকুমাশাসকের রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি।
মহকুমাশাসক বৃহস্পতিবার আদালতে সেই রিপোর্ট পেশ করেন। তাতে বলা হয়েছে, সিপিএমের এক জন সদস্য অপহৃত হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু বোর্ড গঠনের দিন তাদের বাকি সাত সদস্যই হাজির ছিলেন। আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে অবশ্য অভিযোগ করা হয়, শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোর্ড গঠনের দিন আতঙ্কের সৃষ্টি করায় সিপিএম সদস্যেরা হাজির হতে পারেননি।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ, নির্বাচিত গরিষ্ঠ সদস্যদের প্রতিহত করা হচ্ছে। বোর্ড গঠনে নানা ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। এর ফলে আসলে ভোটারদের মতামতই উপেক্ষিত হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরেই ইসলামপুরের কমলগাঁও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতে গুলি চালিয়ে গরিষ্ঠদের হটিয়ে বোর্ড গড়ার অভিযোগ আসায় এর আগেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য-সংখ্যা ১৮। তাঁদের মধ্যে ১২ জন সিপিএমের। পাঁচ জন তৃণমূলের। এক জন কংগ্রেসের। অভিযোগ, বোর্ড গঠনের দিন সিপিএমের ১২ জন সদস্যকে ঢুকতে না-দিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের ছ’জন সদস্য ওই পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন সাঙ্গ করে বোর্ডও গড়ে ফেলেন। তার পরেই রমজান আলি-সহ কয়েক জন নির্বাচিত সদস্য মামলা করেন।
মঙ্গলবার সেই মামলায় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, কী ভাবে ওখানে বোর্ড গড়া হল, রাজ্য সরকার ১০ দিনের মধ্যে হলফনামা পেশ করে তার যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা দিতে না-পারলে ওই বোর্ড ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। সে-ক্ষেত্রে বোর্ড ইতিমধ্যেই যে-সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা-ও খারিজ করে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবারের মামলায় তিনি জানান, এই সংক্রান্ত সব ক’টি মামলার শুনানি হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.