বিক্ষিপ্ত বাধা জমি-মালিকদের
পুলিশ রেখেই কাজ শুরু করল ডিভিসি
পুলিশ মোতায়েন করেই রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ‘ওয়াটার করিডর’-এর কাজ শুরু হল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিতুড়িয়া ব্লকের রায়বাঁধ, গুনিয়াড়া ও বাথানবাড়ি এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। সামান্য বিরোধিতা এলেও মোটের উপরে প্রথম দিন নির্বিঘ্নেই হয়েছে কাজ।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, তিন জায়গায় শুরু হওয়া কাজে রঘুনাথপুর ও নিতুড়িয়া থানার ওসি-র নেতৃত্ব মোতায়েন করা হয়েছে জনা আশি পুলিশকর্মী। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মী এবং প্রকল্পের পক্ষে থাকা কিছু জমিদাতাও ছিলেন। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এন সুধীর কুমার বলেন, “কাজ শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা জনিত সমস্যা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ডিভিসি পুলিশ চেয়েছিল। তাই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” জমিরক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্যেরা অবশ্য এ দিন গুনিয়াড়া এলাকায় কাজে বাধা দেন। এর পরে রায়বাঁধ পঞ্চায়েত অফিসে তৃণমূলের প্রধানকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভে আটকে পড়েন নিতুড়িয়ার যুগ্ম বিডিও। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘেরাও মুক্ত হন তাঁরা। কমিটির নেতা নিখিল মণ্ডল বলেন, “আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই পুলিশ দিয়ে কাজ শুরু করানো হয়েছে। আমরা বড় আন্দোলনে নামব।” ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে ওয়াটার করডিরের কাজে স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা করা হয়েছে বলে কমিটির দাবি।
বৃহস্পতিবার শুরু হল ওয়াটার করিডরের কাজ।—নিজস্ব চিত্র
বস্তুত, একটা সময় কমিটির বিরোধিতায় ডিভিসি-র এই প্রকল্প ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। স্থায়ী চাকরি, বাজারদর অনুযায়ী জমির ক্ষতিপূরণ-সহ নানা দাবিতে কাজ বন্ধ করেছিল জমিরক্ষা সংগ্রাম কমিটি। পুলিশ মোতায়েন করে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অনিচ্ছুকদের জমিতে জোর করে কাজ করা যাবে নারাজ্য সরকারের এই মনোভাব বুঝেই পিছিয়ে আসে জেলা প্রশাসন।
তার পরে জল অনেক দূর গড়িয়েছে। ডিভিসি-র তরফে মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধায়ক ও প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছিল প্রকল্পে একটি ইউনিট উৎপাদন শুরুর মুখে হওয়ায় ‘ওয়াটার করিডর’ (প্রকল্পে জল আনার পাইপলাইন) নির্মাণ জরুরি। প্রশাসনিক সাহায্য না পেলে কাজ করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি এলাকার জমিহারা ও প্রকল্পে বিভিন্ন কাজে জড়িত বাসিন্দাদের বড় অংশও প্রশাসনের কাছে কাজ শুরুর দাবি জানায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী, পুলিশ সুপার এবং ডিভিসি-র রঘুনাথপুরের প্রকল্পের মুখ্য বাস্তুকার দেবাশিস মিত্রের উপস্থিতিতে কাজ শুরুর বিষয়ে আলোচনা হয়। তার দু’দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হল।
শিল্পায়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে রঘুনাথপুরে। কিন্তু, এখানেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মেগা বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় শিল্পমহলে ভুল বার্তা যাচ্ছিল। ডিভিসি-র কাজ শেষ করানোয় রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত রয়েছে। শান্তিরামবাবু বলেছেন, “শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন, রঘুনাথপুরে শিল্পায়ন হোক। এলাকায় ডিভিসি-র ওই প্রকল্প ঘিরে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান হচ্ছে। জমিহারাদের বড় অংশ আমাদের জানিয়েছেন, কাজ বন্ধ থাকায় কর্মসংস্থান ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক স্তরে ও এলাকায় আলোচনা করেই কাজ শুরু হয়েছে।”
ইতিমধ্যেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে এলাকায় গিয়ে প্রকল্পে জমি দেওয়া পরিবার এবং এলাকাবাসী ও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক। দল সূত্রের খবর, বিধায়ককে তাঁরা জানান ,এলাকার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ডিভিসি-র এই প্রকল্প ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা দ্রুত কাটানো দরকার। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনোভাব জানিয়েছিলেন বিধায়ক। পূর্ণচন্দ্রবাবুর কথায়, “বিক্ষিপ্তভাবে কিছু লোক বাধা দিচ্ছে। কিন্তু, কাজ বন্ধ করে আন্দোলন সমর্থন করা যাবে না। আমরা চাইছি, আলোচনার পাশাপাশি কাজও শুরু করতে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.