তল্লাটের দু-দু’টি হাইস্কুল, পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল এবং অন্তত সাতটি ক্লাবের ছেলেপুলেদের খেলার মাঠ সেটি। সেই মাঠের দখল নিয়েই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিবাদ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।
প্রায় দশ কোটি টাকা মূল্যের ওই জমির সম্প্রতি মালিকানা দাবি করেছেন শহরেরই এক বাসিন্দা। জমির অন্যতম দাবিদার উত্তম ঘোষ বলেন, “ওই সম্পত্তি আমার বাবা ও কাকা তাঁদের মা ঊষারানি ঘোষের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে ছিলেন। ভূমি দফতরের নথিতেও তার প্রমাণ রয়েছে। তবুও পুরসভা ওই জমির চার পাশে জবরদস্তি পাঁচিল তুলে দিয়েছে। তার প্রতিবাদেই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” সিজেএম আদালত ওই জমির উপর আপাতত ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “আমরাও স্থানীয় বাসিন্দাদের হয়ে জজর্কোটে আপিল করেছি। সিজেএম আদালত ওই রায়ের উপর আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।” পাশপাশি, স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠ বাঁচাও কমিটি গড়ে দাবি তুলেছেন, মাঠে বহু দিন ধরে এলাকার ছেলেমেয়েরা খেলাধুলো করে, বৃদ্ধরা প্রার্তঃভ্রমণে বের হন। এলাকায় ওটিই একমাত্র খোলা মাঠ। কার্যত এলাকার ফুসফুস। এলাকার কচিকাঁচা খেলুড়ে থেকে প্রীণ, সকলেরই দাবি,“জমির মালিক যেই হোক না কেন, সবুজ ধ্বংস করে সেখানে প্রমোটারদেরকে দেওয়াল তুলতে দেওয়া হবে না।”
তবে ওই মাঠ নিয়ে বিরোধ নতুন নয়। বহরমপুর শহরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার ওই মাঠ নিয়ে বছর পঁচিশেক আগেও বিরোধ দানা বেঁধেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে তা থিতিয়েও গিয়েছিল এক সময়ে।
নীলরতনবাবু জানান, সবুজ বাঁচাতে তাঁদের হাতিয়ার জমির দলিল। ১৯২৯ সালের ১৬ জুলাই-এর রেজিষ্ট্রি করা দলিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ওই ৩১৬ শতক জমির মালিক ছিলেন অনিলপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী মণিমালাদেবী। তাঁর কাছ থেকে পুরসভার প্রয়োজনে জমিটা কিনেছিলেন তৎকালীন পুরপ্রধান তথা কাশিমবাজারের মহারাজা শ্রীশচন্দ্র নন্দী। কিনেতু পুরকর্তাদের গাফিলতিতে সেই রেকর্ড পুরসভায় নথিভুক্ত নেই।” তিনি স্বীকার করেছেন, পুরকর্মীদের একাংশের যোগসাজোশে জালিয়াতি করে ওই জমির ২১৬ শতক অংশ বিক্রিও করে দেওয়া হয়। বাকি ১০৮ শতক জমি এখন ওই এলাকার ফুসফুসের কাজ করছে। ওই নথি সংশোধনের চেষ্টাও চলছে বলে পুরপ্রধান জানান। |